টেটের জল এবার গড়াচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। ২০১২ সালের প্রাথমিকের টেটে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। যা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে মামলাকারীদের। কিন্তু, তাঁরা এতে খুশি নন। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন।
২০১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তিন বার টেটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে পরীক্ষা হয়েছে ২ বার। আর প্রতিবারই মামলার জটে জেরবার টেট। ২০১২ সালে প্রথম টেটের বিজ্ঞপ্তির জারি হয়। পরীক্ষা হয় ২০১৩ সালে ৩৪ হাজার শূন্য পদের জন্য পরীক্ষায় বসেন তিরিশ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক নিযুক্ত হন প্রায় ১৯ হাজার। এই টেট ঘিরে একটি মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার রায় দিতে গিয়ে জানায়, পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। প্রাথমিক পর্ষদকে এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়। যা মামলাকারীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে।
২০১৪ সালে ফের টেটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়পরীক্ষা হয় পরের বছর, ১১ অক্টোবর। সে বার পরীক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ২৩ লক্ষ প্রাথমিকে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন প্রায় ২০ হাজার। ২০১৪ সালের এই টেট নিয়েও দুটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন। এই মামলা দুটির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন নিযুক্ত শিক্ষকরা।
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে একটি মামলা চলছে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলায় ইতিমধ্যেই চার্জশিট দিয়েছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পর্ষদের ভুল উত্তরের অভিযোগে দ্বিতীয় মামলাটি চলছে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চেএই মামলায় ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।
এরই মাঝে ২০১৭ সালে ফের প্রাথমিকে টেটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। এ নিয়েও আবার মামলা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই পরীক্ষায় বসতে পারবেন এর বিরোধিতায় হাইকোর্টে মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে পিছু হঠতে হয় পর্ষদকে। তবে পরীক্ষার এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। এই টেটের সূত্রপাত ২০০৯ সালে তৈরি শিক্ষার অধিকার আইনের হাত ধরে। এই আইন অনুযায়ী তৈরি হয় ন্যাশনাল কাউন্সিল টিচার এডুকেশন। তারা ঠিক করে, প্রাথমিক শিক্ষক হতে হলে উচ্চমাধ্যমিক পাস করতে হবে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে এবং টিচার এলিজিবিলিটি টেস্টে পাস করতে হবে।
সেই, নির্দেশিকা মেনে এ রাজ্যেও শুরু হয় প্রাথমিকে টেট। কিন্তু, শুরু থেকেই টেট মামলার ফাঁসে হাসফাঁস। যা দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ যেখানে জড়িয়ে, সেই পরীক্ষা ঘিরে কেন বার বার এরকম আইনি জটিলতা? কেন এত অনিশ্চয়তা?
Be the first to comment