
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ২০১৬ সালের এসএসসি’তে নিয়োগের পুরো প্যানেল বৃহস্পতিবার বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি। এই নিয়োগ মামলা ঘিরে আলোড়ন শুরু হয়েছিল যাঁর এজলাস থেকে, সেই প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমান বিজেপির সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। তাঁদের নিয়েই মঙ্গলবার বিকেলে এসএসসি দপ্তর অভিযানে যান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি।
এসএসসির দফতর থেকে বেরোনোর সময় অভিজিৎ বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবিদাওয়া জানিয়েছি। ওখানে থাকা পুলিশ আধিকারিককেও জানিয়েছি যে আমরা বুধবার আবার আসব। আমাদের দাবি, ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনা হোক। আর যাঁরা তা প্রকাশ্যে আনতে দিচ্ছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক।’
এদিন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আইনি পরামর্শের জন্য দুপুরেই অভিজিতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন চাকরিহারাদের সংগঠন ‘এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের বৈধ চাকরিহারা সমাজ’- এর প্রতিনিধিরা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চাকরিহারাদের অভিজিৎ পরামর্শ দেন, মুখ্যমন্ত্রী ভাঁওতা দিচ্ছেন, আন্দোলনে থাকতে হবে। বৈঠকের পর সেখান থেকে অভিজিৎ জানান, তাঁদের সঙ্গে এসএসসি অভিযানে যাচ্ছেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে অভিজিৎ বলেন, ‘যোগ্যদের চাকরি বাঁচানোর দায় মুখ্যমন্ত্রীরই। তাঁর জন্যই যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা যাচ্ছে না।’ তাঁর দাবি, এসএসসি চাইলেই যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক করতে পারে। কিন্তু এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের হাত-পা বেঁধে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক কারণেই যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ্যে আনতে দেওয়া হচ্ছে না।
অভিজিতের মতে, ‘যোগ্যদের তালিকা এখনও বার করা সম্ভব। ওঁরা বলছেন, ওঁরা ওএমআরের হার্ডকপি পুড়িয়ে ফেলেছেন! এনিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তবে যদি সত্যই তা হয়ে থাকে তা হলে আসল-নকল বাছাইয়ের উপায় নেই।’ প্রাক্তন বিচারপতির যুক্তি, ‘আপাতত পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে নিয়োগ তালিকা মিলিয়ে দেখা হোক, কতজন আদতে পাশ করেছেন। অথবা অযোগ্যদের বাছতে সিবিআইয়ের তালিকা সঠিক ধরে নিয়ে এগোক এসএসসি।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোমবারের সভাকে ভাঁওতা বলেও কটাক্ষ করেন অভিজিৎ। তাঁর পালটা বার্তা, এখন থেকেই বড় আন্দোলন শুরু করতে হবে। নাহলে সকলকে ডুবে মরতে হবে। অভিজিতের বক্তব্য, সিবিআই যে মাদার ডিস্ক বের করেছিল সেটা এসএসসি সঠিক বলে ধরুক এবং ওটাই ওয়েব পেজে আপলোড করুক। তারপর সেটা সুপ্রিম কোর্টে পেশ করুক। এদিন ফের কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দিয়েছেন অভিজিৎ।
Be the first to comment