নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আপত্তি জানাল কংগ্রেস

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আপত্তি জানাল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শায়ের সঙ্গে বৈঠকে লিখিত ভাবে এই আপত্তির কথা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি। কংগ্রেসের যুক্তি, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত আইনকে চ্যালেঞ্জ করে যেখানে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে, সেখানে এই বৈঠকের যুক্তি কোথায়? যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এনিয়ে আইনজ্ঞদের মতামতও পাওয়া গিয়েছে, সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটিকে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামীকালই অবসর নিচ্ছেন পূর্ববর্তী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি রয়েছে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই পদ ফাঁকা রাখতে চাইছে না। জানা গেছে, আগামীকালই নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আদেশে সই করতে পারেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু।
সূত্রের দাবি, যখন সুপ্রিম কোর্ট ২২ ফেব্রুয়ারি এই মামলা শুনতে রাজি হয়েছে, তখন কংগ্রেস নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠক স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে। কংগ্রেসের আইনজীবীরাও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। কংগ্রেস জানিয়েছে, ‘আমরা ইগোর ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা, বৈঠক স্থগিত রাখা উচিত যাতে শীর্ষ আদালত দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।’ কংগ্রেসের কথায়, সরকার নির্বাচন কমিশনের যোগ্যতা নিয়ে চিন্তিত নয়, বরং এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে।
এতদিনকার নিয়ম অনুযায়ী, মন্ত্রীসভার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে তিন সদস্যের কমিশনে যিনি সবচেয়ে প্রবীণ তিনিই পরবর্তী নির্বাচন কমিশনার হন। সেদিক দিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারেরই পরবর্তী নির্বাচন কমিশনার হওয়ার কথা। তবে বর্তমানে এই নিয়োগ পদ্ধতি বদলে গিয়েছে। ২০২৩ সালের নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি ৫ জনের নাম বাছাই করে সিলেকশন কমিটির কাছে পাঠাবে। সিলেকশন কমিটির গঠনও নতুন আইনে বদলে দেওয়া হয়েছে। আগে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই কমিটির সদস্য হতেন। কিন্তু নতুন আইনে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে সেই যায়গায় ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে আনা হয়েছে। যাঁরা নিয়োগ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু এই পরিবর্তনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে একগুচ্ছ মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, যতদিন না সংসদে আইন প্রণয়ন করে নতুন নিয়ম করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও প্রধান বিচারপতির কমিটিই নতুন নির্বাচন কমিশনার বাছাই করবে। এরপরই  ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সংসদে নতুন আইন পাশ করে নির্বাচন কমিশনার গঠনের কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*