চা-শ্রমিকদের ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার নির্দেশিকা জারি রাজ্যের, বেঁধে দেওয়া হল সময়ও

Spread the love

 

রোজদিন ডেস্ক :-

পাহাড়ের চা-বাগান শ্রমিকদের জন্য বোনাস সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের দফতর থেকে জারি করা ওই অ্যাডভাইজারিতে বলা হয়েছে, দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পঙের চা-বাগানগুলিতে শ্রমিকদের ১৬ শতাংশ হারে বোনাস দিতে হবে। ৪ অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকদের বোনাস দিয়ে দিতে হবে। যদি কোনও চা-বাগানের মালিক পক্ষ আর্থিক ভাবে তেমন লাভবান না থাকে, তারা প্রয়োজনে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে বোনাসের অঙ্কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই কাটল জট। ১৩ শতাংশ নয়, ২০ শতাংশও নয়। ১৬ শতাংশ হারে এবার পুজোর বোনাস পাবেন পাহাড়ের চা-বাগানের শ্রমিকেরা। আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে সেই অর্থ তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। লেবার কমিশনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ১৬ শতাংশ হারে এবার পুজোর বোনাস পাবেন শ্রমিকরা। এই ঘোষণায় হাসি ফুটেছে চা শ্রমিকদের মুখে।
সব থেকে বড় কথা, মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন বোনাসের এই সমস্যা নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। করেওনি। তবে মধ্যস্থতা অবশ্যই করেছে। আলোচনার মাধ্যমেই খুলেছে জট। এর ফলে পাহাড়ের চা-বাগানের লক্ষাধিক শ্রমিক উপকৃত হতে চলেছেন।
পাহাড়ের চা-বাগানের শ্রমিকেরা এবার দাবি তুলেছিলেন তাঁদের ২০ শতাংশ হারে বোনাস দিতে হবে। অন্যদিকে ১৩ শতাংশ হারেই পুজোর বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে অনড় মনোভাব নিয়েছিল চা-বাগানের মালিকেরা। সেই দুইয়ের টানাটানির জেরে পাহাড়ে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। সোমবার হুট করে ১২ ঘন্টা বনধের ডাক দিয়ে বসে চা-শ্রমিকদের সংগঠনগুলি। যদিও চা-বাগানের বাইরে সেই বনধের সেভাবে কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে ওই বনধের জেরে সব থেকে বেশি ভোগান্তির মুখে পড়েন পর্যটকেরা। ঘটনাচক্রে গতকাল সকালের দিকে উত্তরবঙ্গেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে কলকাতায় ফেরার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বনধ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ‘কোথাও কোনও বনধ হচ্ছে না। বাংলায় বনধ হয় না। আমরা কোনও বনধ সমর্থন করি না। এটা রাজনৈতিকভাবে অশান্তি করার চেষ্টা। তরাই-ডুয়ার্সের কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবে পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর বোনাসের বিষয়টা লেবার কমিশন দেখছে, ওরা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে। আমরা হস্তক্ষেপ করব না। তরাই-ডুয়ার্সে বোনাস হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র পাহাড়ের ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করছে একটি রাজনৈতিক দল। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চলছে। আশা করি সেখানে সমাধান বেরিয়ে আসবে। সরকার কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করবে না।’ দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীর সেই আশ্বাসের পরে পরেই রাজ্যের শ্রম দফতর দুই পক্ষকেই টেবিলে টেনে আনে আলোচনার জন্য। আর তাতেই কাটে জট। ঠিক করে দেওয়া হয় যে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ অনুযায়ী যার যা প্রাপ্য, সেই হারে সকলকে বোনাস দিতে হবে। এছাড়া শ্রমিকদের আরও যা যা দাবি ছিল, সেসবও এদিনের লেবার কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*