বিরোধী শিবিরের আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে জেপিসিতে অনুমোদন ওয়াকফ সংশোধনী বিলের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা :– বিরোধী শিবিরের সমস্ত আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে জেপিসিতে অনুমোদন পেল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। পাশাপাশি এনডিএর সাংসদেরা যে ২৩টি সংশোধনী প্রস্তাবগুলি জমা দিয়েছিলেন, তার মধ্যে ১৪টি গৃহীত হয়েছে। অন্যদিকে বিরোধীরা এই বিলে ৪৪টি সংশোধনীর দাবি করেছিলেন, সেগুলি সবকটাই নাকচ করেছে যৌথ সংসদীয় কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান জানান, “গত ৬ মাসের দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা প্রত্যেক সদস্যের কাছে সংশোধনী চেয়েছিলাম। সোমবারের কমিটির শেষ বৈঠক ছিল। এদিনের বৈঠকে মোট ৪৪টি সংশোধনী জমা পড়ে। বিস্তারিত চর্চার পর এর মধ্যে ১৪টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়েছে।” গৃহীত সংশোধনীর পক্ষে ১৬টি এবং বিপক্ষে ১০টি ভোট পড়েছে বলে চেয়ারম্যান জানান।

সম্প্রতি, সংসদের নিম্নকক্ষে ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। এই বিল নিয়ে সংসদে সরব হন বিরোধী সাংসদরা। তাঁদের বিরোধিতার পর বিলটি খতিয়ে দেখার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেয় সরকার। এরপর বিলটি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা শুরু হয় যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।
এদিন, যৌথ কমিটির সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংশোধনী গ্রহণের নামে প্রহসন হয়েছে। আমাদের কোনও কথাই শোনা হয়নি। স্বৈরাচারিতা করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান।” অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ নাসির হোসেনের অভিযোগ, বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ বিরোধী সদস্য বিলের বিরোধিতা করেছেন। অথচ, কোনও মতামতকেই মন্যতা দেওয়া হয়নি। তাছাড়া বিলের ধারা ধরে ধরে আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। অবশ্য, বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। তাঁর কথায়, “সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই এদিনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” উল্লেখ্য, আগামী ২৯ জানুয়ারি যৌথ সংসদীয় কমিটির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করা হবে।
গত শুক্রবার যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক শুরু হতেই শাসক বিরোধী তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকারের নির্দেশে কাজ করছেন কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদম্বিকা পাল। এই নিয়ে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়। সেই বিবাদের জেরে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১০ বিরোধী সাংসদকে একদিনের জন্য কমিটি থেকে বরখাস্ত করা হয়। শুক্রবারই কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন, বিলটি নিয়ে ২৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত বৈঠক করা হবে। আর এদিন জানা গেল কমিটিতে এনডিএ-র সদস্যদের দেওয়া সমস্ত সংশোধনী মেনে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত সংশোধনী ওয়াকফ বিল অনুযায়ী, কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে না বোর্ড। এই অধিকার একমাত্র জেলাশাসকের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে ওয়াকফ বোর্ডের গুরুত্ব কমে যাবে। ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকে অধীক ক্ষমতাশালী হবেন জেলাশাসক।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*