আচমকাই একটা শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা ভেবেছিলেন ভূমিকম্প হচ্ছে। তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন বাড়ির বাইরে। আর তারপর যা দেখলেন তাতে চক্ষু চড়কগাছ। বাড়ির পাশে পাঁচতলা বহুতলটি হেলে পড়েছে। দুই বাড়ির মধ্যে যেখানে দূরত্ব ছিল আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় ফুট, সেখানে এখন একটি বাড়ির কার্নিশে হেলান দিয়ে রয়েছে আরেকটি বাড়ি। জানলায় লেগে গিয়েছে পাশের বাড়ির জানলা। বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে তিলজলার শিবতলা লেনে। হেলে গিয়েছে ১২/১১ নম্বর পাঁচতলা বাড়ি। কার্নিশ ঠেকে গিয়েছে পাশের ১২/১২ নম্বর বাড়ির সঙ্গে। বাড়িটি রয়েছে বিপজ্জনক অবস্থায়। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন যে কোনও মুহূর্তে হয়তো ভেঙে পড়তে পারে।
এ হেন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে তিলজলার শিবতলা লেনে। খবর পেয়ে বুধবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলাকারী দল। পৌঁছন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররাও। হেলে পড়া বাড়িটি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ইতিমধ্যে দু’টি বাড়িই খালি করে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে বসে পুলিশি পাহারা। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, কী কারণে বাড়িটি হেলে পড়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বাড়িটি। তাই সেটি ভেঙে ফেলা হবে কিনা সেই ব্যাপারেও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এ দিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাড়ির বয়স মাত্র সাত বছর। ২০০৯ সালে জলাজমি বুজিয়ে ওই এলাকায় নির্মাণ শুরু হয় ১২/১১ নম্বর বাড়িটির। কাজ শেষ হয় ২০১১ সালে। সাত বছরের মাথাতেই হেলে পড়েছে ওই বাড়ি। স্বভাবতই বাড়ির নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এলাকাবাসীর মনে। কেউ কেউ বলছেন জলাজমি বুজিয়ে তাড়াহুড়ো করে নির্মাণের ফলেই এত কম সময়ে হেলে পড়েছে বাড়ি। কেউ বা বলছেন নির্মাণ সামগ্রীতেও ছিল ভেজাল। অনেকে আবার বলছেন, পাশের ১২/১২ নম্বর বাড়িটি তৈরি হয়েছে ১২/১১ নম্বর বাড়ির পরে। হয়তো সেই সময় খোঁড়াখুঁড়ির ফলে নড়ে গিয়েছিল বাড়ির ভিত। আর তার জেরেই ঘটেছে এই বিপত্তি।
স্থানীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পুলিশ এবং দমকলের অনুমতি ছাড়া কেউ ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। পুলিশের পাশাপাশি নজরদারি করছেন স্থানীয়রাও। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনও বহিরাগত যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেই দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
Be the first to comment