বাংলার কৃষকরা ভাল আছেন৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সমালোচনার পাল্টা জবাব দিল তৃণমূল৷ নাড্ডার উদ্দেশ্যে তৃণমূলের সিনিয়র নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, ভুল কৃষি আইনের জন্য কৃষকদের এই শোচনীয় আবস্থা৷
রাজনৈতিক স্বার্থেই কেন্দ্রীয় প্রকল্প কিষাণ সম্মাণ নিধির সুবিধা পায়নি বাংলার কৃষকরা। পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংস করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির এই অভিযোগের জবাব আগেই দিয়েছে তৃণমূল৷ তাঁরা প্রশ্ন তুলেছে গত ১০ বছরে বাংলায় কোনও কৃষক আন্দোলন দেখেছেন? এখানকার কৃষকদের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁরা ভাল আছেন। রাজ্যে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে ৫ গুণ।”
একইসঙ্গে নয়া কৃষি আইন কতটা কৃষক স্বার্থবিরোধী, তা বোঝাতে গিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, এই আইন কার্যকর হলে ফসল ফলানোর আগেই দাম স্থির হয়ে যাবে। পুঁজিপতিরা নিজেদের ইচ্ছামতো দামে ফসল কিনে প্রচুর মুনাফা লুটবে। কেন্দ্র ঘুরপথে চুক্তিচাষের ব্যবস্থা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা৷
তবে তৃণমূলের কোনও অভিযোগকেই গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের ৭৩ লক্ষ কৃষক পরিবারকে পাশে পেতে তৎপর বিজেপি। এদিন কাটোয়ার জগদানন্দপুর গ্রামে যান বিজেপির সর্বভারতী সভাপতি৷ সেখানে কৃষক সুরক্ষা গ্রাম সভায় অংশ নেন তিনি৷ মূল উদ্দেশ্যই ছিল কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের সুফল কৃষকদের বোঝানো৷ রাজ্যের নীতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্য থেকেও যে কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, তাও তুলে ধরেন জে পি নাড্ডা৷
ওই মঞ্চ থেকেই কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্প বাংলা চালু না করতে দেওয়া থেকে চাল চুরি, কাটমানির প্রসঙ্গে টেনে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় বেঁধেন জে পি নাড্ডা।
তিনি বলেন, ‘এখন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে বলছেন বাংলায় কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প চালু হবে। আমি বলছি মমতা দিদি তার আর প্রয়োজন নেই। বাংলায় বিজেপির ক্ষতায় আসা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ৪০ হাজার গ্রামের কৃষকদের সংগঠিত করা হবে। ২৪-৩১ জানুয়ারি হবে কৃষক ভোজ কর্মসূচি।’
আক্রমণ শানিয়ে নাড্ডা বলেন, ‘তৃণমূল মানেই চাল চোর। কোভিড পরিস্থিতিতে চাল চুরি করেছে তৃণমূল। আমরা রেশন দি, ওরা চুরি করে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামও চুরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে কৃষাণ সম্মান নিধি, অযুস্মান ভারত চালু হবেই।’
নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নাজেহাল মোদী সরকার। এমনই এক পরিস্থিতিতে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে রাজ্যে কৃষিপ্রধান জেলা পূর্ব বর্ধমান থেকেই কৃষকদের কাছে টানার নতুন কর্মসূচির সূচনা করল বিজেপি। কৃষক সুরক্ষা অভিযানে অংশ নিয়ে পাঁচটি পরিবার থেকে এক মুঠো করে ধান সংগ্রহ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।’ চাল-ডালের সঙ্গে কৃষকদের বাড়ি থেকে সবজিও ভিক্ষা হিসাবে গ্রহণ করেন নাড্ডা। এরপর ‘বাড়ি বাড়ি মুষ্টি’ নামে এই কর্মসূচি চালু করবে বিজেপি৷
এদিন কৃষক পরিবারে নাড্ডার মধ্যাহ্ন ভোজনকে কটাক্ষ করেছেন ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি বলেছেন, যাঁদের বাড়িতে উনি খেতে যাচ্ছেন তাঁদের অপমান করছেন৷
Be the first to comment