শুধু ভোটের আগে দেদার প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়। ভোটের আগে যা যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে তার অর্থসংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটাও জানাতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। হলফনামা আকারে পেশ করতে হবে প্রতিশ্রুতি পূরণের ফলে হতে চলা সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। নির্বাচন কমিশনের এই নয়া পরামর্শকে গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক বলে মনে করছে বিরোধী শিবির। তাদের বক্তব্য, মোদি যা বলছেন নির্বাচন কমিশন সেটাই করছে।
আসলে দিন দুই আগেই নির্বাচন কমিশন নিজেদের ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলির উদ্দেশে বলা হয়েছে, ভোটের সময় কোনও চটকদারি প্রতিশ্রুতি নয়। কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে হলে, সেটারও বিস্তারিত হিসাব দিতে হবে। এমন কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাবে না যা আর্থিকভাবে বিপদ ডেকে আনতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দিলেও কীভাবে সেটা বাস্তবায়িত হবে, কোন খাত থেকে টাকা আসবে, সরকার গঠিত হলে আয়ব্যয়ের কী হিসাব হবে সব হলফনামা আকারে প্রকাশ করতে হবে। যাতে ভোটারদের বুঝতে সুবিধা হয়, কোন প্রতিশ্রুতিটি বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব।
আসলে কিছুদিন আগে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটের আগে দেদার প্রতিশ্রুতির বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন। বিরোধী দলগুলির ‘রেবড়ি’ সংস্কৃতি অর্থনীতির জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে দাবি করেছিলেন, তার ঠিক পরই কমিশন যেভাবে খয়রাতি তথা চটকদারি প্রতিশ্রুতি রুখতে উদ্যত হল, তাতে কমিশনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলছেন,”হচ্ছেটা কী! প্রধানমন্ত্রী যেটা বলছেন নির্বাচন কমিশন সেটা করছে। সংবিধান মতে দেশের সবচেয়ে নিরপেক্ষ সংস্থাগুলির মধ্যে একটা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তাদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে এই ধারণা বদলে যায়।”
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের বক্তব্য,”নির্বাচন কমিশন যেটা করতে চাইছে, সেটা তার কাজই নয়। এই নিয়ম মানলে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতির ভুল ভাবনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের কফিনে পোঁতা আরও একটি পেরেক।” রমেশের দাবি, “এভাবে যদি ভোটের আগেই সবকিছুর হিসাব দিতে হত, তাহলে এমন বহু প্রকল্পই বাস্তবায়িত হত না, যেগুলি কিনা যুগান্তকারী প্রকল্প হিসাবে উঠে এসেছে।” শুধু কংগ্রেস বা তৃণমূল নয়। আম আদমি পার্টি, আরজেডির মতো দলগুলিও এ নিয়ে সরব হয়েছে।
Be the first to comment