মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার মধ্যেই পছন্দের প্রার্থী চেয়ে তৃণমূলের দেওয়াল লিখন

Spread the love

মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যেই ফের মালদহে দলীয় কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। শাসকদল প্রার্থী ঘোষণার আগেই পুরসভার চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার নামে দেওয়াল লেখাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের ইংরেজবাজার পৌরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। জেলা সফরের মাঝে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

মালদহ ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। গত পুরভোটে এই আসনটি থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু আদালতে মামলা চলায় তার প্রার্থী পদ খারিজ হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবে ওয়ার্ডটি কাউন্সিলর শূন্য হয়ে পড়ে। পুরআইন অনুযায়ী, এই ওয়ার্ড দেখাশোনার দায়িত্ব যায় চেয়ারম্যানের হাতে। পুর আইন মেনে চেয়ারম্যান নিজে বা অন্য কোনও কাউন্সিলরকে বোর্ড অফ কাউন্সিলের মিটিংয়ে তা জানিয়ে ওয়ার্ড দেখাশোনার দায়িত্ব দিতে পারেন।

অভিযোগ, এক্ষেত্রে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহার রঞ্জন ঘোষ সেই পথে না হেঁটে তারই ঘনিষ্ঠ সুজিত সাহা নামে এক নেতাকে এলাকার দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়। কয়েকদিন আগেই সুজিত সাহার নামে দেওয়াল লিখন দেখা যায়। ঠিক তার পরেই এই সুজিত সাহাকে আগামী দিনে এই এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে ওই এলাকায় তৃণমূলের একটি কর্মীসভায় ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান নীহার রঞ্জন ঘোষ। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই ছড়িয়েছে বিতর্ক।এদিকে তৃণমূল এখনও দলীয় ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তারপরেও এক তৃণমূল নেতার নামে দেওয়াল কিভাবে লেখা হয় এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও সুজিত সাহা নামে ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ”এই লেখা আমি লিখিনি। মানুষ লিখেছে। দল যদি আমাকে প্রার্থী করে আমি ওখানে জয়ী হব।”

কার্যত ওই নেতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহার রঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন, ”দল দেখে তো ভোট হয় না। সব সময় মানুষ যা চায় তাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।” এরপরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ”আইন অনুযায়ী এভাবে কোনও বহিরাগতকে দায়িত্ব দেওয়া যায় না। কে প্রার্থী হবে তা ঠিক করবে তৃণমূল সুপ্রিমো। দুদিন আগেই কলকাতায় বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন তিনি একটি টিম তৈরি করেছেন এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে আগামী কর্মসূচি রূপরেখা তৈরি করছেন। তারপরেও যদি কোনও নেতা ভাবে যে আমি দলকে মানিনা মুখ্যমন্ত্রীকে মানি না তবে সেটা তার ভাবনা।”

যদিও এই ঘটনা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বলেন,এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। সবাইকে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে কাজ করতে হবে।দলের গাইড লাইনের বাইরে যাওয়া যাবেন।”

এদিন পুরাতন মালদহে গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে জেলার নেতৃত্বকে কার্যত ঠিক ভাবে চলার কথা বলেন। ঝগড়া না করে মানুষের পাশে থাকার কথা বলেন। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে কড়া অন্যদিকে তখন পছন্দের প্রার্থী চেয়ে পড়ল দেওয়াল লিখন! স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে ক্ষুব্দ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ!

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*