পুরোভোটে ঘাসফুলেরই জয় জয়কার পূর্ব মেদিনীপুরে। তবুও এনআইএ কাঁটা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ঘাসফুল শিবিরের। জয়ের আনন্দ উপভোগ করার আগেই বুধবার জেলা ছেড়ে ২০ জন তৃণমূল নেতাকে কলকাতায় আসতে হয়েছে এনআইএ দফতরে হাজিরা দেওয়ার জন্য। ফলে জয়ের আনন্দের মধ্যেও বিস্তর খেদ রয়েছে এখন জেলার ঘাসফুল শিবিরে।
বুধবার রিটার্নিং অফিসার উপস্থিতিতে কাঁথি পৌরসভার জয়ী কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান রয়েছে। তবে সেই মুহুর্তে সাক্ষী হতে পারছেন না জেলার হেভি ওয়েট নেতৃত্বর একাংশ। এদিন, প্রায় ২০ জনের বেশি নেতা গিয়েছেন কলকাতায়। ফলত কিছুটা হলেও শঙ্কিত ঘাসফুল শিবির।
গত ৩ জানুয়ারি খেজুরিতে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। খেজুরির জনকা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙনমারি গ্রামে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের তরফে বলা হয়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, বোমা বাঁধার সময়েই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়।
ঘটনার দিনই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় অনুপ দাস নামে এক জনের। আগুনে ঝলসে যান তিনজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় কঙ্কণ রায় নামে আরও এক জনের। ঘটনাটিকে ইস্যু করে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বোমা বাঁধতে গিয়েই মৃত্যু- এই তত্ত্ব জোরাল হতে থাকে। ঘটনায় একাধিক দাপুটে তৃণমূল নেতা জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি এনএইএ তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি।
সেই দাবি মেনে পরবর্তীতে খেজুরি থানা থেকে এই বিস্ফোরণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে এনআইএ আধিকারিকরা। এরপর থেকেই কাঁথি সাংগঠনিক জেলার একের পর এক বড়-বড় তৃণমূল নেতাকে ইতিমধ্যেই নোটিস করা হয়েছে। এরমধ্যে মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধায়ক ও একাধিক বড় নেতৃত্বের নাম রয়েছে।
সূত্র বলছে, সর্ব প্রথম নোটিস পাঠান হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আনোয়ারুদ্দিনকে। পরবর্তীতে একের পর এক মন্ত্রী থেকে বিধায়ক, ছোট-বড় সাংগঠনিক নেতৃত্ব সকলকেই এই কেসের আওতায় আনা হয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৪৭ জন তৃণমূল নেতাকে এনআইএ ইতিমধ্যে নোটিস ধরিয়েছে।
যদিও, শাসকদলের দাবি এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন আর তার আগে তৃণমূলের ভাবমূর্তি খারাপ করতেই এই ফন্দি করেছে বিরোধীরা।
Be the first to comment