একাধিকবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের খবর। আজও ফের একই অভিযোগ উঠল। এবার দলের কর্মীদের হাতেই মার খেতে হল রাজ্যের মন্ত্রীকে। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে আহত হলেন উদ্যান পালন মন্ত্রী সুব্রত সাহা ও বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা। এখানেই শেষ নয়। পাশাপাশি তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।
গত ২১ নভেম্বর একটি চারচাকা গড়িতে করে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ ফিরছিলেন একই পরিবারের ১১ জন সদস্য। র্ধমান কাটোয়া রোডের কামনাড়া এলাকায় তাদের গাড়ি একটি ডাম্পারে ধাক্কা মারে। এরপরই শেষ হয়ে যায় সবকিছু। ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পৌঁছায় স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে। সঙ্গে-সঙ্গে তিনি নির্দেশ বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাকে নির্দেশ দেন যাতে ওই পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ায় তাঁরা। ঠিক সেই কথামতোই হল কাজ। ওইদিনই এলাকায় পৌঁছায় জীবন কৃষ্ণবাবু। সেই মুহুর্তে পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করেন তিনি।
এতদূর পর্যন্ত প্রায় সব ঠিকঠাক চলছিল। সমস্যার সূত্রপাত হলো বুধবার। এদিন বিকেল নাগাদ ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান উদ্যান পালন মন্ত্রী সুব্রত সাহা ও বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা। অভিযোগ,সেই সময় অতর্কিতে তাঁদের উপর হামলা চালায় যুব তৃণমূল সভাপতি মায়ের আলম ও ব্লক সভাপতি গোলাম মুর্শেদ ও তার দলবল। গাড়ি ভাঙচুর করা হয় মন্ত্রী ও বিধায়কের। সঙ্গে মারধর করারও অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠছে ওই পরিবারের সঙ্গে কেন দেখা করার জন্য কেন জীবন কৃষ্ণবাবু একা গেলেন মন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে? কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি ও ব্লক সভাপতিকে? এই বিষয়ে বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা বলেন, “আজকে রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তাই আমাকে তিনি ডেকে নিয়েছিলেন। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে বেশি মানুষের জমায়েত করা ঠিক হবে না। আমরা ওই বাড়িতে যাব আর দেখা করেই চলে আসব।
কিন্তু ব্লক সভাপতি ও যুব সভাপতি দলবল নিয়ে আমাদের ঢুকতে বাধা দেয়। পরে পুলিশের সাহায্যে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করি। পাশাপাশি ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সমবেদনা জানাই। বেরিয়ে আসার সময় হঠাৎ ব্লক সভাপতি ও যুব সভাপতির লোকজন মারধর করতে শুরু করে আমাকে ও মন্ত্রীকে। ওরা বলে থাকে এমএলকে মার, মন্ত্রীকে মার। আমাদের দুজনের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।”
এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ব্লক সভাপতি গোলাম মুর্শেদের বক্তব্য, মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমাদের ছেলেরা করেনি। আমাদের মন্ত্রী আমাদের বিধায়ক কেন হামলা করব? অন্ধকার রাস্তা ছিল কে করেছে জানিনা।
মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “আজ আমি শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেম। সেই সময় আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তবে কে বা কারা করেছে সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ”
Be the first to comment