পুরনো গ্রুপ বন্ধ করে খোলা হয়েছিল নতুন গ্রুপ। কিন্তু রাজ্যসভা সাংসদদের নিয়ে তৈরি নতুন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তাঁকে যুক্ত করা হয়নি বলে খবর আসে। তাতে শোরগোল পড়ে যায় চারিদিকে। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেই তৃণমূল নেতৃত্বের রোষে পড়লেন কি না, শুরু হয় বিতর্ক। সেই আবহেই তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদদের নিয়ে তৈরি নতুন গ্রুপে যুক্ত করা হল জহর সরকারকে। বিতর্কের মুখে পড়েই কি ফেরানো হল জহরকে? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়ে চলেছে দলের একের পর এক নেতার। তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হন জহর। সেই নিয়ে দলের নেতাদের রোষে পড়ছিলেন তিনি। সেই আবহে শুক্রবার রাতে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে শুক্রবার রাতে সাংসদদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়। শনিবার সকালে নতুন করে গ্রুপ খোলা হলেও, তাতে জহরকে রাখা হয়নি বলে দলীয় সূত্রেই জানা যায়। সেই নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে বিকেলের তাঁকে নতুন গ্রুপে যুক্ত করা হয় তাঁকে।
জহরকে নিয়ে গত কয়েক দিনে একে একে তৃণমূলের অনেকেই মুখ খোলেন। তাঁর সাংসদ পদ ছেড়ে উচিত, এমন মন্তব্য করতে শোনা যায় অনেককেই। কিন্তু নিজের অবস্থানেই অনড় ছিলেন জহর। মমতা চাইলে তবেই সরবেন বলে জানিয়ে দেন। এর মধ্যেই জানা যায়, জহরের সঙ্গে তাঁর বাড়ির বাইরে সামনাসামনি দেখা করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সেখানে দলের মনোভাব জহরকে জানিয়ে দেন তিনি। পদত্যাগ করলে করতে পারেন বলে জানানো হয়। তার পরই তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় জহরকে। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের নতুন গ্রুপে যুক্ত করা হল তাঁকে।
দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলার পর থেকেই দলের নেতাদের রোষের মুখে পড়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠর বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় এবং গয়নার স্তূপ উদ্ধার নিয়ে বিরোধীরা যখন সরব, সেই সময় এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন জহর সরকার। বলেছিলেন, যখন টিভিতে দেখলাম বিশ্বাসই করতে পারিনি। কারও বাড়ি থেকে এত টাকা বেরোতে পারে! কল্পনার অতীত। এমন দুর্নীতির দৃশ্য টিভিতে কম দেখা যায়। বাড়ির লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে বলল, রাজনীতি ছেড়ে দাও । সাংসদ পদ ছেড়ে দাও। বাড়ির লোক তো বলছে, এখুনি ছেড়ে দাও বাপু! বন্ধুরা টিপ্পনি করল। বলল, এখনও আছিস? কত পেয়েছিস? এমন লাঞ্ছনা জীবনে কোনওদিন শুনতে হয়নি।
এর পর থেকে, তৃণমূলের নেতারাই, জহরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাতে শুরু করেন। সৌগত বলেন, সাহস থাকলে পদত্যাগ করুন! কমপক্ষে সুবিধা ভোগটা বন্ধ হবে। উনি গেলে কোনও ক্ষতি হবে না। লাভই হবে। বুধবারও জহর সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূলের আরও দুই নেতা। সুখেন্দুশেখর বলেন, আমি মনে করি, যারা দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁরা দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। বিধায়ক তাপস আরও বলেন, ওঁর নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে আমি লজ্জিত। এ সব বলার আগে অন্তত এক বার নেত্রীর সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল জহরবাবুর।
Be the first to comment