রাজ্যের আরও একটি পুরসভা বিনা ভোটে জয় তৃণমূলের। সাঁইথিয়া, বজবজের পর দিনহাটা পুরসভা দখল তৃণমূলের। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিনহাটা পুরসভা দখল করল তৃণমূল। বুধবারই তারা ৭টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পুরসভা দখল করল তৃণমূল। আবির খেলায় মাতলেন তৃণমূল কর্মীরা। ক্ষুব্ধ বামেরা ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
বুধবারই দেখা যায়, বিরোধীদের সাত জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করতে পারেননি। সাতটি আসনে গতকালই জয়লাভ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ১৬ আসন বিশিষ্ট পুরসভায় জয়ের জন্য দরকার ছিল আর দুটি আসনের। এরই মধ্যে খবর আসে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে আরও বেশ কয়েকজন বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে আসেন। এদিকে, সকালে আবার বাম প্রার্থীরা এফিডেফিট জমা দিতে পারেননি। তাঁদের এফিডেফিট ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে আবারও তাঁরা এফিডেফিট জমা করতে যান। কিন্তু তাঁদেরকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
একদল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছে, আরেক দল মনোনয়নপত্র জমাই দিতে পারেনি- দুইয়ের জেরে আরও দুটি আসন ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায় তৃণমূল। মনোনয়নপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে বুধবার দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। শীতলকুচির বিধায়ক মিহির গোস্বামী আট জন বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে এসডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। সেখানে তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠে।
আট জন বিজেপি প্রার্থী মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মনোনয়ন জমা দিয়েই ফিরে আসেন কোচবিহারে। দিনহাটার তিন প্রার্থী পরে চাপের মুখে পড়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে বুধবার রাতেই সোচ্চার হয় বিজেপি। সকালে বামফ্রন্টের এফিডেফিট ছিঁড়ে ফেলারও অভিযোগ ওঠে।
এদিন দিনহাটা পুরভোট দখলের পরই আবির খেলায় মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, “এখানে বিরোধীদের কোনও সংগঠন নেই। চক্রান্ত জালিয়াতি করাই এদের কাজ। টোটালটাই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এই জয় উদয়ন গুহর জয়। এই জয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর জয়।”
অন্যদিকে, বামেদের আবেদন, “আমরা যেমন প্রার্থীর নাম প্রত্যাচার করে নিলাম, তেমনি জনগণের কাছে আবেদন রাখব, এই নির্বাচন থেকে আপনারাও সরে দাঁড়ান।”
তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর বক্তব্য, “এটা নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা কোনও সময়েই ছিল না। দিনহাটা পৌরসভা তৃণমূলের দখলে যাবে, এটা নিয়ে সন্দেহ ছিল না। আমাদের টার্গেট ছিল ১৬-০, আমরা শেষ পর্যন্ত ১৬-০ তেই জিতব। এখানে ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিএমের রেষারেষিতে ওরা প্রার্থী দিতে পারেনি। ফরওয়ার্ড ব্লক চাই নি সিপিএম প্রার্থী দিক, পাল্টা সিপিএমও তাই চেয়েছিল। বিজেপি তো শক্তিহীন। কোমর পড়ে গিয়েছে।” অন্যদিকে, কোচবিহারে অন্য ২০ টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিতে পেরেছেন বিরোধীরা। সেক্ষেত্রে কোনও অশান্তি ছবি প্রকাশ্যে আসেনি।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মিহির গোস্বামীকে ডিম, ঢিল ছুড়ে মারা হয়। তিনি নিরামিষভোজী। তাঁকে পচা ডিম ছুড়ে মারায় তাঁর যে অস্বস্তি হয়েছে, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোঝা উচিত। যত অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে, গনতন্ত্র তত তাড়াতাড়ি উজ্জীবিত হবে।”
Be the first to comment