আভুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আব্দুল কালাম
জন্মদিন : ১৫ অক্টোবর ১৯৩১ স্থান- রামেশ্বরম, তামিলনাড়ু
তিনি ছিলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশতম রাষ্ট্রপতি (২০০২-২০০৭)। কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে তিনি ঘটনাচক্রে রাজনীতিবিদে পরিণত হন। তিনি পদার্থবিদ্যা বিষয়ে সেন্ট জোসেফ’স কলেজ থেকে এবং বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা (এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিষয় নিয়ে মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর চল্লিশ বছর তিনি প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিসাইল ম্যান অব ইন্ডিয়া’ বলা হয়।
তিনি ১৯৬০ সালে স্নাতক সম্পন্ন করার পর ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার এরোনটিক্যাল ডেভলপমেন্ট এস্টাব্লিশমেন্টে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে আব্দুল কালাম ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় বদলি হন। সেখানে তিনি ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণকারী যান (এসএলভি-III)-এর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন যা ১৯৮০ সালের জুলাইয়ে ‘রোহিণী’ কৃত্রিম উপগ্রহকে তার কক্ষপথে স্থাপন করে।
তিনি ১৯৬৩-৬৪ সালে নাসার ল্যাংলি রিসার্চ সেন্টার, গোডার্ড স্পেশ ফ্লাইট সেন্টার এবং ওয়ালোপ্স ফ্লাইট ফেসিলিটি পরিদর্শন করেন। তিনি ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ সালের মাঝে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (পিএসএলভি) এবং এসএলভি-III গড়ার চেষ্টা করেন। তিনি এই কাজে সফল হয়েছিলেন।
২০০২ সালে কালাম তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর তিনি শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন কালাম।
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুলাই মেঘালয়ের শিলং শহরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে বসবাসযোগ্য পৃথিবী বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় ভারতীয় প্রমাণ সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট নাগাদ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে বেথানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে সন্ধ্যা ভারতীয় প্রমাণ সময় ৭টা ৪৫ নাগাদ তাঁর মৃত্যু ঘটে। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে জানাই শ্রদ্ধা।
মীরা নায়ার
জন্মদিন : ১৫ অক্টোবর ১৯৫৭ স্থান- রাউরকেলা, ওড়িশা
তিনি একজন নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং অভিনেত্রী তার প্রযোজনা সংস্থার নাম মিরাবাই ফিল্মস। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র, সালাম বোম্বে (১৯৮৮), কান চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন ক্যামেরা পুরস্কার লাভ করে এবং শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের জন্যে একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হয়।
তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলি হল— জামা স্ট্রিট মসজিদ জার্নাল, সো ফার ফ্রম ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ক্যাব্যারেট, চিল্ড্রেন অব এ ডেসক্রাইভ সেক্স, সালাম বোম্বে, মিসিসিপি মশালা, দ্য ডে দ্য মার্সেডিজ বিকাম ও হ্যাট, দ্য পেরেজ ফ্যামেলি, কাম সূত্র: এ টেল অব লাভ, মাই ওউন কান্ট্রি (শোটাইম), মনসুন ওয়েডিং, হিস্টিরিয়াক্যাল ব্লাইন্ডনেস , স্টিল, দ্য চিল্ড্রেন আর হেয়ার, ভ্যানিটি ফেয়ার, দ্য নেমসেক, মাইগ্রেশন, এমিলিয়া, দ্য রিল্যাকটেন্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট, দ্য বেঙ্গলি ডিটেকটিভ।।
তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব, বিএএফটিএ পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে মনোনীত হয়েছেন। তিনি ২০০৭ সালের বিদেশে ভারত ব্যক্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১২ সালে তাঁকে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল কর্তৃক ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তাঁর সাম্প্রতিকতম চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, রিজ উইদারস্পুনের সাথে ভ্যানিটি ফেয়ার, দ্য নেমসেক, এমিলিয়া, এবং দ্য রিল্যাকটেন্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট। তাঁর জন্মদিনে রোজদিন-এর শুভেচ্ছা।
ভিক্টর ব্যানার্জি
জন্মদিন : ১৫ অক্টোবর ১৯৪৬
ভিক্টর ব্যানার্জি এমন একজন ভারতীয় অভিনেতা যিনি একাধারে ইংরেজি ভাষা, হিন্দি ভাষা, বাংলা ভাষা এবং অসমীয়া ভাষায় অভিনয় করেছেন। তিনি বিশিষ্ট পরিচালক যেমন, রোমান পোলান্স্কি, জেমস আইভরি, স্যার ডেভিড লিন, জেরি লন্ডন, রোনাল্ড নিয়েম , সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, শ্যাম বেনেগাল এবং রাম গোপাল বর্মা-র সঙ্গে কাজ করেছেন।
তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলি হল – দুই পৃথিবী, শতরঞ্জ কি খিলাড়ি, পিকু, কাল্ল্যুগ, আরোহণ, দুসরী দুলহান, প্রতিদান, ঘরে বাইরে, এ প্যাসেজ টও ইন্ডিয়া, আক্রোশ, প্রতিকার, একান্ত আপন, লাঠি, মহা পৃথিবী, True Adventures of Christopher Columbus (১৯৯২) (টিভি সিরিয়াল), অন্তর্ঘাত, ভুত, Joggers’ Park, Bow Barracks Forever, যন্ত্র, It Was Raining That Night, My Brother…Nikhil, হোম ডেলিভারি, হো সাকটা হ্যায়, Bradford Riots, দ্য বঙ্গ কানেকশান, তারা রাম পাম, আপনে, তাষান, সরকার রাজ, গোসেনবাগানের ভূত, মেহেরজান, Delhi in a Day, Tor Naam, গুণ্ডে, Jeeya Jurir Xubax, Blemished Light….. ইত্যাদি।
১৯৮৪ সালে তিনি ডেভিড লিনের এ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া চলচ্চিত্রে ড. আজিজ আহমেদের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তাতে পশ্চিমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এই চরিত্রের জন্য ১৯৮৬ সালে তিনি ব্রিটিশ একাডেমী অব টেলিভিশন এবং ফিল্ম আর্টস পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। যদিও তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বলিউড-এ যুক্ত, তারপরেও তিনি পশ্চিমবঙ্গের সিনেমার সঙ্গে জড়িত। তিনি মঝে মধ্যে ব্রিটিশ চলচ্চিত্রে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর জন্মদিনে রোজদিন-এর শুভেচ্ছা।
আব্দুল মান্নান হোসেন
জন্মদিন : ১৫ অক্টোবর ১৯৫২ স্থান- মুর্শিদাবাদ
আব্দুল মান্নান হোসেনের পিতা ও মাতার নাম যথাক্রমে আব্দুল গফুর ও খুরমা বিবি। তিনি আর. কে. এন. কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছিলেন।
পেশায় শিক্ষাবিদ আব্দুল মান্নান হোসেন ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সালে চতুর্দশ লোকসভায় নির্বাচিত হয়ে খাদ্য, উপভোক্তা ও গণবণ্টন বিষয়ক কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি এই কমিটি এবং রেল মন্ত্রকের উপদেষ্টা কমিটির দায়িত্বভার পালন করেন। ২০০৬ সালে তিনি ওয়াকফ বিষয়ক যৌথ সংসদীয় কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে পঞ্চদশ লোকসভায় পুনর্নির্বাচিত হয়ে তিনি আবার খাদ্য, উপভোক্তা ও গণবণ্টন বিষয়ক কমিটির সদস্য মনোনীত হন। আব্দুল মান্নান হোসেন কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জীবনব্যাপী সদস্য। তাঁর জন্মদিনে রোজদিন-এর শুভেচ্ছা।
তথ্য সংকলন : হোসেনুর রহমান
Be the first to comment