সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়
জন্মদিন : ২০ অক্টোবর ১৯২০
তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা ব্যারিস্টার, পাঞ্জাবের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও ভারতের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা সুধীরকুমার রায় ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের একজন নামকরা ব্যারিস্টার ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য। তাঁর মা ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের কন্যা। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুল, মিত্র ইনস্টিটিউশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ল পাশ করেন।
১৯৭২ সালের নির্বাচনে তিনি পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। জন্মদিনে রোজদিন-এর শ্রদ্ধা।
বীরেন্দ্র সহবাগ
জন্মদিন : ২০ অক্টোবর ১৯৭৮ স্থান- হরিয়ানা
তিনি ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন স্বনামধন্য খেলোয়াড়। বীরু, নজফগড়ের নবাব ও আধুনিক ক্রিকেটের জেন মাস্টার নামেও পরিচিত। তিনি অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার। ১৯৯৯ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক ঘটে এবং ২০০১ সালে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলে জায়গা পান। তিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২১৯ রান করে এই ধারায় রেকর্ডধারী হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন।
২০০১ সালে প্রথম টেস্ট ও ১৯৯৯ সালে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ দিয়ে তাঁর খেলার জীবন শুরু হয়। ১০২ টেস্ট ম্যাচ ও ২৫১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছাড়াও আইপিএল-এ দিল্লি ডেয়ারডেভিলের হয়ে খেলেছেন তিনি।
বিক্রম ঘোষ
জন্ম ২০শে অক্টোবর ১৯৬৬ : কলকাতা
তিনি ভারতীয় বাঙালি তবলা বাদক, যিনি হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং ফিউশন সংগীত প্রস্তুত করেছেন। তাঁর সংগীত গভীরভাবে পাতিয়ালা ঘরানার, খেয়াল ও ঠুংরি দ্বারা প্রভাবিত । বিক্রম ঘোষ সংগীত এবং সংস্কৃতিকে নতুন ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরিচিত; তিনি সংগীত ঘরানার একটি সুবিশাল ক্ষেত্রে নিজেকে সংপৃক্ত করেছেন, শাস্ত্রীয়, রক, আধুনিক , ফিউশন সংগীত থেকে নিয়ে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত অবধি।
বিক্রম ঘোষ পশ্চিম বঙ্গের, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা তবলাগুরু শঙ্কর ঘোষ ও মা শাস্ত্রীয় গায়িকা সংযুক্তা ঘোষ। তিনি লা মারটেনিয়ার কলকাতায় পড়াশোনা শুরু করেন। পরে তিনি যথাক্রমে সেন্ট জেভিয়ার’স কলেজ ,কলকাতা থেকে ইংরাজিতে স্নাতক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর উপাধি লাভ করেন।
বিক্রম ঘোষ, বিখ্যাত সরোদ-বাদক ওস্তাদ আলী আকবর খান এবং সেতার বাদক পণ্ডিত রবিশঙ্কর-সহ আরো অন্যদের সঙ্গে সঙ্গত করেছেন। তিনি একই সংগীতানুষ্ঠানে , তাঁর বাবার সঙ্গেও যুগলবন্দি বাজান। তিনি প্রাক্তন বিটলস জর্জ হারিসনের মৃত্যুর আগে তাঁর সঙ্গে কাজ করেন। বিক্রম ঘোষকে বিভিন্ন ভূমিকায় সংগীত জগতে দেখা যায় । তাঁর দীর্ঘদিনের দল রিদিমস্কেপ ২০১১ সালে তাঁদের ১০তম বার্ষিকীতে, নব্য-লয় সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রদর্শন করেন। এই ১০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য কলকাতা ও মুম্বাইতে ফোকট্রনিকের দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠানে রিদিমস্কেপ গ্রেগ এলিসের সঙ্গে প্রদর্শন করেন। তাঁর দল তাঁদের দ্বিতীয় এ্যালবাম ট্রান্সফরমেসান বের করেন ,যেটি ভারতীয় রেকর্ডিং আর্টস পুরস্কার ২০১২-তে শ্রেষ্ঠ ফিউশন অ্যালবাম বলে বিবেচিত হয়। বিক্রম ঘোষ, ত্রৈকলাতে স্কটিস গায়ক, গীতকার রাচেল সেরমান্নি এবং অসমীয়া (লোক/ইন্ডি) গায়ক পাপনেরসঙ্গে প্রদর্শন করেন। ত্রৈকলা, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ফোকট্রনিক দ্বারা সংকলিত এবং আয়োজিত। “সুফি-ফিউসান”-এ তিনি সংগীত শিল্পী অম্বরীশ দাস ও পার্বতী কুমার, কিবোর্ডিস্ট ইন্দ্রজিৎ দে এবং ড্রামার অরুণ কুমারের সঙ্গে ফিউসান সুফির অংশ হিসাবে প্রদর্শন করেন। বিক্রম ঘোষ জাল ছায়াছবির সংগীত রচনা করতে সোনু নিগমের সঙ্গে যোগ দেন। বিক্রম ঘোষ এ ছাড়াও অনেক সিনেমা জন্য সংগীত রচনা করেছেন, যার মধ্যে মীরা নায়ারের লিটল জিজোউ ও আছে। বিক্রম ঘোষ ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে মেল্টিং পট প্রোডাকসন্স নামে তাঁর সংগীত কোম্পানি চালু করেন। জন্মদিনে রোজদিন-এর শুভেচ্ছা।
অতুলপ্রসাদ সেন
জন্ম ২০শে অক্টোবর ১৮৭১
তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ভারতবর্ষে ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবির্ভুত একজন বিশিষ্ট বাঙালি গীতিকার, সুরকার, গায়ক, ও একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতবিদও ছিলেন। তাঁর রচিত গানগুলির মূল উপজীব্য বিষয় ছিল দেশপ্রেম, ভক্তি ও প্রেম। তাঁর জীবনের দুঃখ ও যন্ত্রণাগুলি তাঁর গানের ভাষায় বাঙ্ময় মূর্তি ধারণ করেছিল বেদনা অতুলপ্রসাদের গানের প্রধান অবলম্বন।
তাঁদের আদি নিবাস ছিল তৎকালীন ফরিদপুর জেলার মাদারিপুর মহকুমার দক্ষিণ বিক্রমপুরের মগর গ্রামে। বাল্যকালে পিতৃহীন হয়ে অতুল প্রসাদ ভগবদ্ভক্ত, সুকন্ঠ গায়ক ও ভক্তিগীতিরচয়িতা মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হন। পরবর্তীকালে মাতামহের এসব গুণ তাঁর মাঝেও সঞ্চালিত হয়। অতুল প্রসাদ ১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পাশের পর কিছুদিন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন করেন।
অতুলপ্রসাদ বাংলা গানে ঠুংরি ধারার প্রবর্তক। তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। তাঁর রচিত বাংলা গজলের সংখ্যা ৬-৭টি। গীতিগুঞ্জ (১৯৩১) গ্রন্থে তাঁর সমুদয় গান সংকলিত হয়। এই গ্রন্থের সর্বশেষ সংস্করণে (১৯৫৭) অনেকগুলি অপ্রকাশিত গান প্রকাশিত হয়। অতুলপ্রসাদের গানের সংখ্যা ২০৮। অতুলপ্রসাদ সেনের কয়েকটি বিখ্যাত গান হলো, মিছে তুই ভাবিস মন, সবারে বাস রে ভালো,বঁধুয়া, নিঁদ নাহি আঁখিপাতে, একা মোর গানের তরী, কে আবার বাজায় বাঁশি, ক্রন্দসী পথচারিণী ইত্যাদি। তাঁর রচিত দেশাত্মবোধক গানগুলির মধ্যে প্রসিদ্ধ উঠ গো ভারত-লক্ষ্মী, বলো বলো বলো সবে, হও ধরমেতে ধীর। তাঁর মোদের গরব, মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা গানটি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অণুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। অতুলপ্রসাদের গানগুলি দেবতা, প্রকৃতি, স্বদেশ, মানব ও বিবিধ নামে পাঁচটি পর্যায়ে বিভক্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গানের বিশেষ গুণগ্রাহী ছিলেন। অতুলপ্রসাদী গান নামে পরিচিত এই ধারার একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী হলেন কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়।
তাঁর সর্বমোট গানের সংখ্যা মাত্র ২০৬টি এবং সে সবের মধ্যে মাত্র ৫০-৬০টি গান গীত হিসেবে প্রাধান্য পায়। অতুল প্রসাদের মামাতো বোন সাহানা দেবীর সম্পাদনায় ৭১টি গান স্বরলিপি-সহ কাকলি (১৯৩০) নামে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। তাঁর অপর গানগুলিও গীতিপুঞ্জ এবং কয়েকটি গান নামে দুটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত হয়। ১৯২২-২৩ সালের দিকে কলকাতা থেকে প্রথম অতুল প্রসাদের গানের রেকর্ড বের হয় সাহানা দেবী ও হরেন চট্রোপাধ্যায়ের কন্ঠে।
২৬ আগস্ট ১৯৩৪ সালে মারা যান। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন কাওরাইদ ব্রহ্ম মন্দিরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। জন্মদিনে রোজদিন-এর শ্রদ্ধা।
তথ্য সংগ্রহ : মাসানুর রহমান
Be the first to comment