ক্যাপ্টেন ডাক্তার লক্ষ্মী সেহগল
জন্মদিন : ২৪ অক্টোবর ১৯১৪
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ডা. লক্ষ্মী ছিলেন সিঙ্গাপুরের এক বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। পরে তিনি তাঁর লোভনীয় কর্মজীবন ত্যাগ করে আজাদ হিন্দ ফৌজের রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এশিয়ায় এ ধরনের নারীবাহিনী ছিল সর্বপ্রথম এবং এক সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। এ দায়িত্বের পাশাপাশি ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী সংগঠন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। বিবাহ-পূর্ব সময়কালীন তাঁর নাম ছিল লক্ষ্মী স্বামীনাথন। লক্ষ্মী সেহগলকে ভারতের জনগণ ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী হিসেবে চিনে থাকেন। বার্মার কারাগারে অবস্থানকালীন সময়ে র্যাংক হিসেবে তাঁকে এ পদবী দেওয়া হয়েছিল।
সেহগাল চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নে আগ্রহী হন এবং মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৩৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। এর এক বছর পর গাইনোকোলজি এবং অবস্টেট্রিক্স বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী হন। চেন্নাইয়ের ত্রিপলিক্যান এলাকার সরকারি কস্তুর্বা গান্ধী হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৭১ সালে লক্ষ্মী সেহগাল সিপিআই(এম)-এ যোগ দেন ও রাজ্যসভায় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। উদ্বাস্তু শিবির পরিচালনা-সহ কলকাতায় বাংলাদেশী শরণার্থীদেরকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে মুখ্য ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরে ভূপালের গ্যাস দুর্ঘটনায় চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেন।
১৯ জুলাই ২০১২ সালে ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগাল হৃদযন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হন। অতঃপর ৯৭ বছর বয়সে ২৩ জুলাই ২০১২ তারিখে ১১:২০ ঘটিকায় কানপুরে মৃত্যুবরণ করেন। কানপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রয়োজনে তাঁর দেহ দান করা হয়। রোজদিন-এর পক্ষ থেকে জন্মদিনে শ্রদ্ধা।
ঋদ্ধিমান প্রশান্ত সাহা
জন্মদিন : ২৪ অক্টোবর ১৯৮৪
পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির শক্তিগড়ে জন্মগ্রহণকারী ভারতের উদীয়মান ক্রিকেটার। তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও বিশেষজ্ঞ উইকেট-কিপার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ঋদ্ধিমান ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলা ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলছেন। আইপিএলের সপ্তম আসরের চূড়ান্ত খেলায় প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রবেশের পূর্বে তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২২ দলে খেলেন। ২০০৬-০৭ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফি প্রতিযোগিতায় আসামের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০০৭-০৮ মরসুমে হায়দরাবাদের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন তিনি। বাংলার ১৫তম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অভিষেকেই শতরান হাঁকানোর গৌরব লাভ করেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করায় ২০০৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।
দীনেশ কার্তিকের বিপরীতে সংরক্ষিত উইকেট-কিপার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণের জন্য ঋদ্ধিমানকে ২৮ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে ভারতের টেস্ট দলে ডাকা হয়। জন্মদিনে রোজদিন-এর শুভেচ্ছা।
কৌশিকী চক্রবর্তী
জন্মদিন : ২৪ অক্টোবর ১৯৮০
তিনিএকজন বিখ্যাত ভারতীয় ক্লাসিকাল সঙ্গীত শিল্পী।চক্রবর্তী ভারতের কলকাতায় ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চন্দনা চক্রবর্তী এবং বিখ্যাত ভারতীয় ক্লাসিকাল সঙ্গীত শিল্পী অজয় চক্রবর্তীর কন্যা। সাত বছর বয়সে তিনি পন্ডিত জনন প্রকাশ ঘোষ এর সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গান শিখেন এবং পরবর্তীতে আইটিসি সঙ্গীত গবেষণা একাডেমীতে গান শিখেন। তিনি তার স্কুলজীবন শেষ করেন কলকাতার পাথা ভবন বিদ্যালয় থেকে। ২০০২ সালে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্বীকৃত যোগময় দেবী কলেজ থেকে দর্শনে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক অর্জন করেন।
কৌশিকী ভারতের দোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স, দ্য আইটিসি সঙ্গীত সম্মেলন, ক্যালিফোর্নিয়ার দ্য স্প্রিং ফেস্টিভাল অব মিউজিক এবং লস এঞ্জেলেসের পরম্পরা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বড় কনসার্টে অংশ নেন।
গান পরিবেশনার পাশাপাশি, তিনি রূপসী বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গীত শিল্পীদের সাথে একটি সাপ্তাহিক আলোচনা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। জাদু ভত্ত (১৯৯৫), আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং পার্সন (২০০০), বিবিসি অ্যাওয়ার্ড (২০০৫) পুরস্কারে তিনি ভূষিত হন। জন্মদিনে রোজদিনের শুভেচ্ছা।
প্রবোধ চন্দ্র দে
মৃত্যুদিন : ২৪ অক্টোবর ২০১৩
ডাক নাম মান্না দে (জন্ম: মে ১, ১৯১৯) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীত শিল্পীদের একজন। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটি-সহ অজস্র ভাষায় তিনি ষাট বছরেরও অধিক সময় সঙ্গীত চর্চা করেছিলেন। বৈচিত্র্যের বিচারে তাঁকেই হিন্দি গানের ভুবনে সবর্কালের সেরা গায়ক হিসেবে স্বীকার করে থাকেন অনেক বিশেষজ্ঞ সঙ্গীতবোদ্ধারা।
মান্না দে গায়ক হিসেবে ছিলেন আধুনিক বাংলা গানের জগতে সর্বস্তরের শ্রোতাদের কাছে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় ও সফল সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। এছাড়াও, হিন্দি এবং বাংলা সিনেমায় গায়ক হিসেবে অশেষ সুনাম অর্জন করেছেন। সঙ্গীত জীবনে তিনি সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেন। সঙ্গীত ভুবনে তার এ অসামান্য অবদানের কথা স্বীকার করে ভারত সরকার ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ এবং ২০০৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে সম্মাননায় অভিষিক্ত করে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে রাজ্যের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান “বঙ্গবিভূষণ” প্রদান করে।
তামান্না’ (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে গায়ক হিসেবে মান্না দে-র অভিষেক ঘটে। সুরাইয়া’র সাথে দ্বৈত সঙ্গীতে গান এবং সুরকার ছিলেন কৃষ্ণ চন্দ্র দে। ঐ সময়ে গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। ;মশাল (১৯৫০) ছবিতে শচীন দেব বর্মণের গীত রচনায় ‘ওপার গগন বিশাল’ নামে একক গান গেয়েছিলেন। এর গানের কথা লিখেছিলেন কবি প্রদীপ। ১৯৫২ সালে মান্না দে বাংলা এবং মারাঠী ছবিতে একই নামে এবং গল্পে ‘আমার ভূপালী’ গান গান। এরফলেই তিনি প্রতিষ্ঠিত ও পাকাপোক্ত করেন এবং জনপ্রিয় গায়ক হিসেবে সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পান।
মান্না দে ভীমসেন জোসি-র সাথে একটি জনপ্রিয় দ্বৈত গান ‘কেতকী গুলাব জুহি’ গান। এ ছাড়াও, তিনি কিশোর কুমারের সাথে আলাদা গোত্রের দ্বৈত গান হিসেবে ‘ইয়ে দোস্তী হাম নেহী তোড়েঙ্গে (শোলে)’ এবং ‘এক চতুর নার (পডোসন)’ গান। দ্বৈত সঙ্গীতে লতা মঙ্গেশকরের সাথে ‘কে প্রথম কাছে এসেছি (শঙ্খবেলা)’ গান করেছেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতসহ প্রায় ৩৫০০ গান গেয়েছেন মান্না দে।
২০১৩ সালের ৮ জুন ফুসফুসের জটিলতা দেখা দেওয়ায় মান্না দে কে ব্যাঙ্গালোরে একটি হাসপাতালের আইসিইউ তে ভর্তি করা হয়। ৯ জুন, ২০১৩ সালে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে ডাক্তাররা এই গুজবের অবসান ঘটান এবং নিশ্চিত করেন যে তিনি তখনও বেঁচে আছেন তবে তাঁর অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছে এবং আরও কিছু নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে।পরবর্তিতে ডাক্তাররা তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানান।মান্না দে ২৪ অক্টোবর ২০১৩ সালে ব্যাঙ্গালোরে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুদিনে রোজদিনের শ্রদ্ধা।
Be the first to comment