শ্যামশের রাজ কাপুর
জন্ম: ২১ অক্টোবর, ১৯৩১
মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প জগতের একসময়কার জনপ্রিয় নায়ক এবং চলচ্চিত্র পরিচালক ছিলেন। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে হিন্দি সিনেমা অঙ্গনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়, শীর্ষস্থানীয় চিত্রতারকা শিল্পী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তাঁর পিতা পৃথ্বীরাজ কাপুর ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র তারকা এবং থিয়েটারের অভিনেতা। তিন ভাইয়ের মধ্যে তাঁর অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। বড় ভাই রাজ কাপুর ও ছোট ভাই শশী কাপুর। ভাইত্রয় প্রত্যেকেই তাঁদের পিতার মতো বলিউডে সফলতম অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। শৈশবের অনেকখানি সময়ই অতিবাহিত করেন কলকাতায়। সেখানে তিনি কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি হন। মুম্বইয়ে ফিরে প্রথমে ওয়াদালা’র সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট এবং পরে মাতুঙ্গা’র ডন বস্কো বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। হিউজেস রোডের নিউ এরা বিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিদ্যালয় পর্ব সমাপণ করেন শাম্মী।
গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালী জগৎ শুরু করলেও নাসির হুসাইনের পরিচালনায় তুমসা নাহি দেখা (১৯৫৭) ও দিল ডেকে দেখো (১৯৫৯) এর মাধ্যমে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ছবি দু-টোয় তাঁর বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন যথাক্রমে অমিতা এবং আশা পারেখ। উষ্ণ হৃদয়, নজরকাড়া আকর্ষণ, লম্বা, প্রাণবন্ত, নীলাভ আঁখি, আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি ছিলেন সকলের হৃদয়ের মণি। এবং তাঁর সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গী ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গীও এ বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী।
তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলি হল— জীবন জ্যোতি (১৯৫৩), রেল কা ডিব্বা (১৯৫৩), থোকর (১৯৫৩), লায়লা মজনু (১৯৫৩), লড়কী (১৯৫৩), গুল সানোবার (১৯৫৩), খোঁজ (১৯৫৩), শ্যামা পরোয়ানা (১৯৫৪), মেহবুবা (১৯৫৪), এহসান (১৯৫৪), চোর বাজার (১৯৫৪), টাঙ্গেওয়ালী (১৯৫৫), নকব (১৯৫৫), মিস কোকা কোলা (১৯৫৫), ডাকু (১৯৫৫), সিপাহসালার (১৯৫৬), রঙ্গীন রাতে (১৯৫৬), মেমসাহেব (১৯৫৬), হাম সব চোর হ্যায় (১৯৫৬), তুমসে নাহি দেখা (১৯৫৭), মহারাণী (১৯৫৭), কফি হাউজ (১৯৫৭), মীর্জা সাহেবান (১৯৫৭), মুজরিম (১৯৫৮), দিল ডেকে দেখো (১৯৫৮), উজালা (১৯৫৯), রাত কি রাহি (১৯৫৯), মোহর (১৯৫৯), বসন্ত (১৯৬০), কলেজ গার্ল (১৯৬০), সিঙ্গাপুর (১৯৬০), বয়ফ্রেণ্ড (১৯৬১, জাংলী (১৯৬১), দিল তেরা দিওয়ানা (১৯৬২), প্রফেসর (১৯৬২), চায়না টাউন (১৯৬২), ব্লাফ মাস্টার (১৯৬৩), শহীদ ভগৎ সিং (১৯৬৩), জব সে তুমহে দেখা হ্যায় (১৯৬৩), পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া (১৯৬৩), রাজকুমার (১৯৬৪), কাশ্মীর কি কালী (১৯৬৪), জানোয়ার (১৯৬৫), তিসরী মঞ্জিল (১৯৬৬) ইত্যাদি।
শাম্মী কাপুরকে ৭ আগস্ট ২০১১ সালে ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে কিডনিজনিত রোগের কারণে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকলে ভেন্টিলেটরের সাহায্য বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্তকর চেষ্টা চলে। কিন্তু হিন্দি চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেতাদের একজন হিসেবে শাম্মী কাপুর ১৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে ভারতীয় সময় সকাল ৫:১৫ ঘটিকায় ধরাধাম ত্যাগ করেন। জন্মদিনে রোজদিন এর শ্রদ্ধা।
Be the first to comment