ভস্মীভূত টলিগঞ্জে প্রযোজনা সংস্থার গোডাউনে। সাতসকালে একটি মুভি সংস্থার গোডাউনে বিধ্বংসী আগুন লাগে। দমকলের ১৫ টি ইঞ্জিন দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনও কিছু পকেট ফায়ার রয়েছে। তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। গোডাউনের পাশেই প্রচুর আবাসন রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। তবে তা রোখা সম্ভব হয়েছে। গোডাউনের ভিতর কারোর আটকে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ আগুন লাগার সময়ে গোডাউনে কেউ ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দমকলের বিরুদ্ধেও গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। কারণ দমকলের ইঞ্জিন এলেও জলের ব্যবস্থা ছিল না। সেক্ষেত্রে পাশের আবাসনগুলির রিজার্ভার থেকে জল নেওয়া হয়। আবাসনের বাসিন্দারাও নিজেদের বাড়ির ছাদ থেকে পাইপ দিয়ে জল নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেন দমকলকর্মীরাও। ঘটনাস্থলে যান বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন তিনি। অরূপ বিশ্বাস বলেন, “সব ঠিক আছে। আগে আগুন নেভানোটাই লক্ষ্য।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৬ টার কিছু পর আগুন লাগে গোডাউনে। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে গোডাউন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে দ্রুত। গোডাউনের শেডটি টিনের। আগুনটি যেভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে, প্রচণ্ড শব্দে টিনের শেড ফেটে ভেঙে পড়ে। গোডাউনের ভিতর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে দ্রুত।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খবর দেওয়ার বেশ কিছুটা পর প্রথমে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আরও চারটি ইঞ্জিন। তবে গোডাউনের সামনের রাস্তাটা অত্যন্ত সংকীর্ণ। সেক্ষেত্রে ইঞ্জিন ঢুকতেও সমস্যা হয়। এখনও পর্যন্ত প্রযোজনা সংস্থা কর্তৃপক্ষের কাউকে দেখা যায়নি। তবে একটি মুভি সংস্থার গোডাউনে প্রচুর অত্যাধুনিক ও মূল্যবান যন্ত্র, সরঞ্জাম, ক্যামেরা ও ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্র রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে। আগুন যেভাবে গ্রাস করেছে গোডাউনটিকে, তাতে ভিতরের অধিকাংশ জিনিসই পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কী থেকে আগুন লেগেছে, তা এখনও পর্যন্ত বলতে পারেননি দমকল কর্মীরা। দমকল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আগুন নেভানোটাই প্রাথমিক লক্ষ্য। পরে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। শর্ট সার্কিট থেকে কোনও ভাবে আগুন লেগে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দমকলকর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ভোরে তাঁরা একটি বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। প্রথমে ভেবেছিলেন বাজি ফাটার শব্দ। পরে দেখতে পান আগুন লেগেছে সামনের গোডাউনে। সেক্ষেত্রে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, একটি জরাজীর্ণ পুরনো বাড়ির ভিতরেই প্রযোজনা সংস্থার গোডাউন। আগুনে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেই বাড়ি। সেটিও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকছে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেছেন, “প্রথমে চারটি গাড়ি আসে। পরে ১৫টা আসে। এখন আগুনটা নিয়ন্ত্রণে। স্টুডিওতে প্রচুর দাহ্য পদার্থ ছিল। দ্রুততার সঙ্গে দমকল সবটা করেছে। এখনও কিছু পকেট ফায়ার আছে। সেগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।”
Be the first to comment