পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর দায় কার, কেন্দ্র না রাজ্যের। এই দড়ি টানাটানিতে আপাতত ঝুলে রয়েছে হাজার হাজার শ্রমিকের ভবিষ্যত। এরই মাঝে নয়া তথ্য দিল রেলমন্ত্রক। তাঁদের দাবি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন বাংলায় চালানোর কোনও প্রস্তাব রেলের কাছে এসে পৌঁছয়নি। শনিবারই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ইতিমধ্যেই আটটি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার।
কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব ও তেলেঙ্গানা থেকে শ্রমিকদের পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসবে এই স্পেশাল ট্রেনগুলি। এরপরেই প্রতিক্রিয়ায় রেলমন্ত্রক জানিয়ে দেয় এই ধরণের কোনও ট্রেন চালানো প্রস্তাব তাঁদের কাছে আসেনি। ফলে এখনই ট্রেনগুলি চালানো হচ্ছে না।
শনিবার বেলা তিনটের সময় হায়দরাবাদ থেকে মালদহে এসে পৌঁছয় একটি ট্রেন। এখনও পর্যন্ত বাংলায় দুটি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়েছে। একটি রাজস্থান থেকে আরেকটি কেরল থেকে। উল্লেখ্য, শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনের টিকিটের দাম এবং শ্রমিকদের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়েছে কেন্দ্র। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য যে বিশেষ ট্রেনগুলির ব্যবস্থা হয়েছে তার ভাড়া কেন্দ্র বা রেল কেউই দেবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকেই তা তুলতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং এই টাকা তুলে রেলের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্য সরকারগুলিরই। রাজ্য চাইলে শ্রমিকদের থেকে টাকা নাও নিতে পারে।
তবে, টিকিট ছাড়া রেল শ্রমিকদের ফেরাবে না বলেই জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রেল গাইডলাইন প্রকাশ করে জানিয়েছে বাংলার তরফ থেকে ট্রেনের সংখ্যা বা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা দিয়ে কোনও তথ্য আসেনি। তাই কোথা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হবে তারও খসড়া রাজ্য দেয়নি বলে অভিযোগ রেলের। রেল জানিয়েছে শনিবার মোট ৪৭টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানো হয়েছে। তবে তার কোনোটিই বাংলার মধ্যে চলেনি। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেন।
যেখানে তাঁর দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরাতে রেল যে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে, তা এ রাজ্যে প্রবেশে অনুমতি দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী। ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে বলেও চিঠিতে অভিযোগ জানান তিনি। কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে এদিন বিকেলে প্রতিক্রিয়া দেয় নবান্ন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ দিয়ে বোঝান, অমিত শাহর অভিযোগের ভিত্তি নেই।
রাজ্য অনেক আগে থেকেই অন্যান্য রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের ফেরাতে সেসব রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছে। গত ৩ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে চিঠি দেওয়ার কাজ। কেরল, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও রাজস্থান সরকারকে নবান্নের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গত তিন তারিখ কেরল এবং রাজস্থান সরকারকে চিঠি পাঠায় নবান্ন। সাত তারিখ চিঠি পাঠানো হয় তেলেঙ্গানা ও কর্ণাটক সরকারের কাছে।
Be the first to comment