উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি জখম হয়েছেন শতাধিক। এই জখমদের অনেকেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে আটকে পড়েছেন নতুন মুস্তাফাবাদ এলাকায় অবস্থিত অল হিন্দ হাসপাতালে। উন্নত চিকিৎসার খাতিরে তাঁদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
বুধবার মধ্যরাতে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধরের বাড়িতে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হয় ৷ আইনজীবী সুরুর মন্দার হাইকোর্টে এক আবেদনে জানান, দিল্লির অল হিন্দ হাসপাতালে জখম অনেকেই আটকে পড়েছেন। তাঁদের সেখান থেকে GTB হাসপাতালে স্থানান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ হিংসায় মদতদাতারা অ্যাম্বুলেন্স যেতে দিচ্ছে না বলে জানান মন্দার ৷ তিনি ফোনে অল হিন্দ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ আনোয়ারের সঙ্গে বিচারপতির কথোপকথনের ব্যবস্থা করেন ৷
চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ ২২ জন জখম চিকিৎসাধীন ৷ মঙ্গলবার বিকেল চারটের পর থেকে তাঁদের স্থানান্তরের প্রয়োজন ছিল ৷ কিন্তু পুলিশ কোনও সহযোগিতা করেনি ৷ তাঁদের দ্রুত সুরক্ষার সঙ্গে স্থানান্তরের জন্য পুলিশের সাহায্যের দরকার বলে জানান ডাঃ আনোয়ার ৷
গোটা বিষয়টি শোনার পর দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার অলোক কুমার এবং DCP (ক্রাইম) রাজেশ দেও-য়ের উপস্থিতিতে বিচারপতি মুরলীধর নির্দেশ দেন, জখমদের নিরাপদে স্থানান্তরিত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক ৷ প্রাথমিকভাবে মানুষের জীবন রক্ষা করা এবং তাঁদের চিকিৎসা প্রদান করা জরুরী ৷ প্রয়োজনে বাহিনী মোতায়েন করে অল হিন্দ হাসপাতালের জখমদের স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি ৷ GTB হাসপাতাল না হলে মৌলানা আজাদ কিংবা LNJP হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যেতে বলা হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরই DCP রাজেশ দেও অল হিন্দ হাসপাতালে পৌঁছে যান ৷ জখমদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেন ৷ মামলাকারী আইনজীবী মন্দার আদালতে জানিয়েছিলেন, জখম ও মৃতদের সম্পর্কে কোনও তথ্য তাঁদের পরিজনরা জানতে পারছেন না ৷ দিল্লি পুলিশ যেন হেল্প ডেস্ক তৈরি করে ৷ DCP দেও জানান, তাঁরা এই বিষয়েও দ্রুত কাজ করছেন ৷
গত দু’দিন ধরে CAA বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে । জখম ২০০ জন। গোটা বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লি পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও।
Be the first to comment