বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নয়ডায় এক ফ্ল্যাটের পাঁচ তলা থেকে পড়ে মারা গেলেন এক তরুণী। তিনি এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অ্যাঙ্কর ছিলেন। বয়স ২৫। বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর এক পুরুষ সহকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
মৃতের নাম রাধিকা কৌশিক। তিনি নয়ডায় সেক্টর ৭৭-এ এক বহুতল বাড়ির ফ্ল্যাটে থাকতেন। বহুতলের নাম অন্তরীক্ষ ফরেস্ট সোসাইটি। বহুতলের নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত তিনটে বেজে কুড়ি মিনিটে রাধিকা ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে পড়ে যান। তাঁর ফ্ল্যাটে ছিলেন এক পুরুষ সহকর্মী। নাইট গার্ড শুনতে পান, ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার করে সেই ব্যক্তি সাহায্য চাইছেন। চিৎকার শুনে রক্ষীরা দৌড়ে এসে দেখেন, রাধিকা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দু’মাস আগে রাধিকা বেসরকারি টিভি চ্যানেলে চাকরি পান। তার পরে নয়ডায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। ফ্ল্যাট থেকে মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, পড়ে যাওয়ার আগে ওই তরুণী মদ্যপান করেছিলেন। খুন বা দুর্ঘটনা, কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তার রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে, কীভাবে ওই অ্যাঙ্করের মৃত্যু হয়েছে।
রাধিকার বাড়ির লোকের অভিযোগ, ফ্ল্যাটে উপস্থিত পুরুষ সহকর্মীটি তাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। ধৃত ব্যক্তি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাধিকা যখন পড়ে যান তখন তিনি ছিলেন ওয়াশরুমে। মদ্যপান করার ফলে রাধিকা সম্ভবত ব্যালকনি থেকে পড়ে গিয়েছেন। রাধিকা পড়ে গিয়েছেন দেখে তিনি সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন ও সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
রাধিকার বাবা ব্রজেশ কৌশিক পেশায় সঙ্গীত শিক্ষক। তিনি বলেন, আমার মেয়ে ছিল সহজ-সরল। সে কখনও মদ্যপান করত না। দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমি মনে করি না। রাত ১১টায় আমি তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। তখনও পর্যন্ত মনে হয়নি কোনও অস্বাভাবিকত্ব আছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাধিকার সঙ্গে ফ্ল্যাটে থাকতেন আর এক মহিলা। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। সেই রাতে রাধিকা তাঁকে বলেছিলেন, অনলাইনে যেন ডিনারের অর্ডার দেন। ফ্ল্যাটের ব্যালকনির রেলিং মাত্র তিন ফুট উঁচু। সেখান থেকে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়।
Be the first to comment