চিরন্তন ব্যানার্জি, কলকাতা :- সম্ভবত এযাবৎ কালের স্মরণীয় ঘটনা ঘটল কলকাতা পুরসভার মূল ভবনে। এতদিন ইঁদুর, বিড়াল মায় হগ মার্কেটের কুকুরও ঢুকে পড়েছিল পুরসভায়। এবার কলকাতা পুরসভায় অন্দরে ঢুকে পড়ল সাপ। পরপর দুদিন সাপের আনাগোনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পরেছেন কলকাতা পুরসভার কর্মীরা।
বুধবার দুপুর বারোটা নাগাদ যা ঘটল তা এককথায় নজিরবিহীন। ডেপুটি মেয়রের ঘরের ভিতর থেকে কয়েকজন কর্মী ছুটে বেরিয়ে আসেন। রীতিমতো ভীত-সন্ত্রস্ত চেহারা। চিল চিৎকার করছেন ‘সাপ, সাপ!’ সহকর্মীদের আতর্নাদ শুনে ছুটে আসেন পাশের ঘরের কর্মীরা। প্রায় সবরাই এক কথা ডেপুটি মেয়রের ঘরের আলমারির নিচে একটি সাপ! যাঁরা দেখেছেন তাঁরা আর ঘরের ভিতর ঢুকতে নারাজ। কিন্তু যাঁরা দেখেননি তাঁদের উৎসাহ দেখবার মতো। রীতিমতো ভিড়ে ভিড়াক্কার। খবর গেল পুরসভার কন্ট্রোল রুমে। সেখান থেকেও লোক-জন হাজির হলেন। তবে কেউ দেখেছেন। আবার কেউ দেখেননি। এরপরে আর দেরি না করে বনদফতরকে খবর দেওয়া হল। ঘন্টা দেড়েক পরে বনদফতরের কর্মীরা এসে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের ঘরে খানা তল্লাসি চালালেও সাপ বাবাজীর দেখা না পেয়েই খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁদের।
এরপর বৃহস্পতিবার সকল বেলায় আবার সাপের দেখা মেলে কাউন্সিলর ক্লাবের বারান্দায়। আবারও শুরু হয় সাপ সাপ বলে চিল চিৎকার, এদিন ফের খবর গেল বনদফতরে, এবার তরিঘরি সাপ ধরতে পুসভায় হাজির হলেন বনদফতরের কর্মীরা। হুক ট্যাং এবং বাগ নিয়ে চলতে থাকে প্রায় দুঘন্টা ধরে খানাতল্লাশি। এরপর এদিনও নিরাশ হয়ে ফিরে যায় তাঁরা। তবে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্মী সোমনাথ দেবনাথ জানান, ‘অনেক সময় ধূপ খেতে বা ইঁদুর খেতে বেরিয়ে আসে সাপ।’ এদিন কলকাতা পৌর সংস্থার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘরে ও যান আলিপুর চিড়িয়াখানার বনকর্মীরা। দীর্ঘক্ষণের তল্লাশির পর অবশেষে গতকালের মত আজকেও খালি হাতে ফিরলেন চিড়িয়াখানা বনকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই হগ বিল্ডিংয়ের এক পুর আধিকারিকের ঘর থেকে একটি বেঁজিকে রীতিমতো কসরৎ করে বের করা হয়। সেই বেঁজিটিও বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এবার কুকুর, বেঁজির পর সাপ।
তবে পরপর দু’দিন কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের অন্দর থেকে সাপ বেরোনো ঘটনায় অবশেষে নড়েচড়ে বসেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে কলকাতা পৌর সংস্থার কর্মী থেকে আধিকারিক সবার মধ্যেই।
Be the first to comment