‘দুয়ারে প্রহার’! বিতর্কিত এই মন্তব্যের জেরে উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করল বিজেপি। সোমবার সকালে কোতোয়ালি থানায় কোচবিহারের বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ দায়ের করেন। তবে উদয়ন গুহ নিজের বক্তব্যে অনড়। উদয়নের সাফাই ‘কর্মিসভায় বলেছি, সেকথা কর্মীদের উদ্দেশেই।’ নেতার সাফ বক্তব্য, “আমি কর্মিসভায় গিয়ে বলেছি। কর্মিসভায় গিয়ে দলের কর্মীদের সতর্ক করার দায়িত্ব তো আমাদের সবারই। আমি বলেছি, নানা রকম সুযোগ সুবিধা নিচ্ছো, দলের কাছ থেকে, সরকারের কাছ থেকে, পুরসভার কাছ থেকে। তারপর ভোটের সময়ে প্রার্থী পছন্দ হল না, আমি প্রার্থী হতে পারলাম না, একথা বললে তো হবে না। নানাভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, প্রতারণা করবে, তাদের জন্য নতুন প্রকল্প, দুয়ারে প্রহার প্রকল্প। কর্মিসভাতে একথা বলেছি। কর্মিসভায় বসে কি জনসাধারণকে বলা যায়?”
তৃণমূলের অনেক নেতাই উদয়ন গুহর এই বক্তব্য মেনে নিতে পারেননি। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “তৃণমূল উদয়নের এই বক্তব্য অনুমোদন করে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষদের জন্য দুয়ারে সরকার প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। সরকারকে এই ভাবে হেয় করার কোন এক্তিয়ার নেই উদয়ন গুহর।
অন্যদিকে উদয়ন গুহর মন্তব্যেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি। ঘোর সমালোচনা করেছে বিজেপি নেতা মিহির গোস্বামি। তিনি বলেছেন, “এটাই ভোটের লড়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের স্ট্র্যাটেজি। তৃণমূল এইভাবেই সব জায়গায় ভোট করায়। কলকাতা পৌরনিগম নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এইভাবেই জয়ী হয়েছে তারা।”
উদয়ন গুহর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “উদয়ন গুহর কাছে গোটা বঙ্গ সমাজের কৃতজ্ঞ থাকার উচিত। সংবাদমাধ্যমকে অভিনন্দন জানানো উচিত। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস এতদিন পর্যন্ত যেভাবে চলেছে, সেটাই অত্যন্ত সহজ সরলভাবে উপস্থাপিত করেছেন উদয়ন গুহ। এই ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রত্যেক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এই ভাবেই তৃণমূল গত ১০ বছর ধরে এগিয়েছে চলেছে। এটাই তৃণমূলের মোডাস অপারেন্ডি। সিপিএম আগে বলত গরিবের পাশে সিপিএম আছে। তাই বড়লোকের বিরুদ্ধে গরিবের লড়াইকে জোরদার করতে আপনারা বামফ্রন্টকে ভোট দিন। অন্য সরকার হলে বুর্জোয়ার সরকার হবে। কিন্তু সিপিএম কী কী প্রকল্প এনেছে? উদয়ন গুহর পদ্ধতিটা জানা আছে।”
পুর নির্বাচনকে সামনে রেখে দিনহাটার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মিসভা করছেন উদয়ন গুহ। এমনই এক সভা মঞ্চ থেকে কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়েছে মায়েদের । পুরসভা কোথাও কোথাও নারায়ণ ভান্ডার শুরু করেছে পুরুষদের জন্য । লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নারায়ণ ভাণ্ডার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে কেউ যদি অন্য প্রার্থীকে ভোট দেন তাহলে তাদের জন্য নতুন প্রকল্প আনবে পুরসভা। যার নাম হবে দুয়ারে প্রহার।”
Be the first to comment