অর্চনা খুনের রহস্যভেদে পুলিশ যত এগোচ্ছে, তত নতুন নতুন রহস্য হাজির হচ্ছে তদন্তকারীদের সামনে। আপাতত পুলিশ সূত্রে খবর, চোদ্দ বছরের মেয়ে এবং সাত বছরের ছেলের মা তিরিশ বছরের অর্চনার জীবনে ছিল তিন তিনজন পুরুষ। প্রথম তাঁর স্বামী পিন্টু, তারপর তাঁর এক এক পরকীয়া সঙ্গী এবং সম্প্রতি পুলিশের নজরে এসেছে বলরাম নামের অন্য একজন পুরুষ। ফেসবুকের চ্যাট উইন্ডো ঘেঁটে যা পাওয়া গেছে তাতে তদন্তকারীরা মনে করছেন, বলরামে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন অর্চনা।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিন দুপুর বেলা মোবাইল সারানোর নাম করে উল্টোডাঙার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অর্চনা। তারপর আর ফেরেননি। স্থানীয় থানায় মিসিং ডাইরি করে শ্বশুরবাড়ির লোক। স্বামী খোঁজ করতে যান অর্চনার বাপের বাড়ি জানবাজারেও। বৃহস্পতিবার চৌবাগার আনন্দপুর পাম্পিং স্টেশনের সামনে বস্তাবন্দি একটি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরনে লাল কুর্তি আর কালো লেগিন্স। সংবাদপত্রে ছবি দেখে শুক্রবার মর্গে গিয়ে স্ত্রী’র দেহ শনাক্ত করেন স্বামী পিন্টু।
প্রাথমিক জেরায় পুলিশকে পিন্টু জানিয়েছিলেন, কয়েক বছর আগে অর্চনা তাঁর এক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে পালিয়ে গেছিলেন। প্রায় এক মাসের কাছাকাছি শ্বশুরবাড়ি মুখো হননি। পরে স্বামী পিন্টু গিয়ে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ঘরের বউকে ঘরে ফিরিয়ে আনেন। সংসারে থাকলেও ওই বন্ধুর সঙ্গে যে অর্চনার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাও পুলিশকে জানান পিন্টু। কিন্তু ওই বন্ধুকে খুঁজে পাওয়ার আগেই পুলিশের সামনে ফেসবুক জানিয়ে দিল, ওখানেই শেষ নয়। অর্চনার জীবনে রয়েছে আরও প্রেম। এবং সে প্রেম পরকীয়ার থেকেও ঘন।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এই বলরামের সঙ্গে অর্চনা চালাচালি করতেন নানান মুহূর্তের ছবি। স্নান থেকে রান্না করার মুহূর্ত, সব কিছু অর্চনা শেয়ার করতেন বলরামের সঙ্গে। সেক্স চ্যাটেরও প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তকারীরা প্রাথমিকভাবে বলরামের নাগাল পেতে চাইছে। পুলিশ মনে করছে, বলরামের সঙ্গে অর্চনার সম্পর্ক কয়েকমাসের। কিন্তু এর মধ্যেই যে ধরনের চ্যাট বা ছবি ফেসবুক ঘেঁটে পাওয়া গেছে তাতে এটা পরিষ্কার, এই কয়েকমাস দু’সন্তানের মা অর্চনার হৃদয় দখল করে নিয়েছিল বলরাম। পুলিশের অনুমান হয়তো দ্বিতীয় প্রেমিক এই ঘটনা জেনে ফেলেই প্রতিশোধ নিতে খুন করে থাকতে পারে অর্চনাকে। তবে গোটা ছবি পরিষ্কার হবে বলরামকে ধরতে পারলেই। তাই অর্চনা খুনের কিনারা করতে এখন পুলিশের একমাত্র টার্গেট বলরামই।
Be the first to comment