
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- এবার অনশনের পথে সদ্য চাকরিহারারা। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে এসএসসি ভবনের সামনে অনশন শুরু করবেন চাকরিচ্যুতদের একাংশ। বুধবার তাঁদের উপর হওয়া ‘পুলিশি অত্যাচারে’র বিরুদ্ধে এই অনশন। তাঁদের দাবি, নিজের মেধায় চাকরি পাওয়ার পরও সেই চাকরি হারিয়ে তাঁদের পথে বসতে হয়েছে। তাই অনশনের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। আপাতত পঙ্কজ রায় নামে একজন শিক্ষক অনশন শুরু করলেন। তাঁদের মূল দাবি, মিরর ইমেজ প্রকাশ করুক এসএসসি। অন্যদিকে বুধবার কসবার ডিআই অফিস অভিযানে যুক্ত চাকরিহারাদের বিরুদ্ধে জোড়া মামলা দায়ের হল। একটি মামলা করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক, অপরটি কসবা পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে।
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। দিনদুয়েক আগে নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন আশ্বাস। তবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের আশ্বাস সত্ত্বেও আন্দোলনের পথ থেকে সরছেন না চাকরিহারাদের একাংশ। বৃহস্পতি ও শুক্রবার পরপর দু’দিন দু’টি কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশনে জমায়েত। সেখান থেকে মিছিল যাবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত। শুক্রবার এসএসসি ভবন অভিযান। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষকে মিছিলে পা মেলানোর আহ্বান জানিয়েছেন চাকরিহারারা। তবে কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই মিছিলে যোগ দিক, তা চাইছেন না তাঁরা। এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হল অনশনও। রাতভর এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থান করেছেন চাকরিহারাদের একাংশ। আজ সকাল ১১টা থেকে অনশনও শুরু করেন আপাতত চারজন। আন্দোলনকারীদের দাবি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা এবং সিবিআইয়ের কাছে থাকা ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে। তাঁদের কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট কারও আশ্বাসে চাকরি ফেরাবে না। প্রয়োজন তথ্য প্রমাণ। তাই যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে আমাদের অনশন।”
বুধবার কসবায় চাকরিহারাদের ডিআই অফিস ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শহর কলকাতা। এর পর রাতভর SSC ভবনের কাছে অবস্থান করেন চাকরিহারারা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা অনশন-আন্দোলনের ঘোষণা করেন। কিন্তু এতে কি সুরাহা হবে? আন্দোলনকারীরা বলেন, “গতকাল এসএসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করি। তিনি বলেছেন, মিরর ইমেজ আছে। যোগ্যদের পৃথক, নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবি করে আসছি। কবে সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে, যোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে কবে রিভিউ পিটিশন করবেন, জানতে চাই। সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি। ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেল এসএসসি ভবনের সামনে আন্দোলনের বীজ বপণ করেছি। কাল ডিআই অফিস অভিযানে গিয়ে আমাদের সাথীদের উপর পুলিশের নির্বিচারে লাঠিচার্জকে ধিক্কার জানাই। কিন্তু আসল রোগ এসএসসি-র ভবনে। সেখানেই আন্দোলনের বীজ বপণ করেছি আমরা। ভেদাভেদ ভুলে আপনারা সবাই আসুন।”
অন্যদিকে, বুধবার ডিআই অফিস অভিযানে অংশ নেয় চাকরিহারাদের একাংশ। সেই দলেই ছিলেন মেহবুব মণ্ডল, ধৃতেশরাও। অভিযোগ, কসবায় পুলিশের লাঠির ঘা-ও সহ্য করতে হয় তাঁদের। এমনকী, চাকরিচ্যুতদের পেটে লাথি মারতেও দ্বিধা করেননি উর্দিধারীরা! চাকরিহারাদের উপর লাঠিচার্জ যে হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বার্মা। তিনি বলেন, “কসবার ডিআই অফিসে হামলায় ৬ জন জখম। তাঁদের মধ্যে ১ জন হাসপাতালে। পুলিশ বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিয়েছে।” তবে চাকরিহারাদের বিরুদ্ধে শুধু বলপ্রয়োগ নয়, পুলিশ এবার আইনি পদক্ষেপও করল। দায়ের হল জোড়া মামলাও।
Be the first to comment