বৃহস্পতিবার শহর যখন উৎসবমুখর। রাজপথ যখন ঢাকের বোল, ধামসা, মাদলের তালে মুখরিত। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে ইউনেস্কোর সম্মানকে উদযাপনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় পা মেলালেন, সেই সময় বারবার বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা গেল,’এই কৃতিত্ব পুরোপুরি মোদী সরকারের’। বিজেপির মুখপাত্র অমিত মালব্য এদিন একটি টুইটে লেখেন, ‘ইউনেস্কো ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের সম্মান জানিয়েছে দুর্গাপুজাকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্য একটি শোভাযাত্রা করছেন। তিনি এই স্বীকৃতির কৃতিত্ব নিতে চান। কিন্তু সত্যি এটাই যে, এই কৃতিত্বে তাঁর কোনও ভূমিকাই নেই। এই কৃতিত্ব এসেছে মোদী সরকারের অধীনস্থ সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির জন্য।’
এক মাস আগে পুজোর সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জোড়াসাঁকো থেকে যে শোভাযাত্রা শুরু হয়, সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আজ থেকেই আমাদের দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল। এবারের পুজোয় নতুন আগমন। নতুন আগমনী মায়ের। আমরা ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের সকল বন্ধুকে ধন্যবাদ জানাই, যারা কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ করতে সহযোগিতা করেছেন। জয় মা দুর্গা বলে এগিয়ে চলুন। সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব সম্প্রদায়, সবাইকে নিয়ে।”
এর আগে একাধিকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, অনেকে বলেন, এই বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। তারা ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিতে যোগ্য জবাব পেয়েছে। একইসঙ্গে এর আগে তিনি বহুবার বলেছেন, পুজো আবহে ক্লাবগুলিকে সরকারের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি। বিসর্জনের কার্নিভ্যালের প্রসঙ্গও গত কয়েকদিনে বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে তাঁর বক্তব্যে।
যদিও বিজেপি কোনওভাবেই ইউনেস্কোর এই সম্মান প্রদানের কৃতিত্ব মমতার সরকারকে দিতে নারাজ। অমিত মালব্যর সুরেই বিজেপি নেতা জগন্নাথ চক্রবর্তী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় দুর্গাপুজো এই সন্মান পেয়েছে। তথ্যসংস্কৃতি মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি এই মূল কাজটি করেছে। যদিও এদিনই জোড়াসাঁকোতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “এটা সারা পৃথিবীর কাছে ভারতের গর্ব। আর এটা তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের দিদি, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশ বিদেশ থেকে মানুষ এসেছেন।
এছাড়া টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়াতেও মানুষ দেখছেন। এটা একটা অন্য মেজাজ। যারা রাজনীতি করছে করুক, বৈদিক ভিলেজে খেয়েছে, ঢেকুর তুলুক, ওরা বুঝবে না। এটা অনুভবের, উপলব্ধির। বাংলার মানুষ, ভারতবর্ষের মানুষ করতে পারেন, কিন্তু ওরা যে রাজনৈতিক দলে, তাতে পারবে না। বাংলা যদি দুর্গাপুজো না নিয়ে যেত, ওদের সাধ্য ছিল এই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার?”
Be the first to comment