টাইপ ১ ডায়াবেটিস মোকাবিলায় রাজ্যের ভূয়সী প্রশংসা করল ইউনিসেফ। এক্ষেত্রে বাংলাকে মডেল হিসেবে চিহ্নিত করা হল। মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল ইউনিসেফের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
জানা গিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায় ইউনিসেফ। সেইসঙ্গে শিশুদের স্বাস্থ্য বিষয়েও তাঁরা কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের টাইপ-১ ডায়েবেটিসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ হবে। এই খবর নিজেই এক্স- হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, বাংলা এখন দেশে মডেল। আমি খুশি যে তাঁরা আমাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মক্ষমতার প্রশংসা করেছেন। এবং আমাদের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই প্রথম নয়, এর আগেও স্বাস্থ্য-রোগী পরিষেবার ক্ষেত্রে রাজ্য গোটা দেশে নিজেদের দক্ষতার ছাপ রেখেছে। বিশেষ করে কোভিডের সময় বাংলা যেভাবে কাজ করেছে, মানুষকে সামলেছে, গোটা দেশে তা উদাহরণ। এবার ডায়াবেটিসের মতো বিশ্বজোড়া কার্যত মারণ-রোগের বিরুদ্ধে বাংলাকে মডেল হিসেবে চিহ্নিত করায় আখেরে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এ-রাজ্যের চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবায় এক নতুন পালক যোগ হল। যা নিঃসন্দেহে গর্বের।
A high-level delegation of UNICEF met me today at Nabanna. They praise the West Bengal model of care for Type 1 Diabetes patients and are looking forward for greater collaboration with us in the Non Communicable Disease space for children.
Glad that they appreciate our… pic.twitter.com/HtoQG1dFdc
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 13, 2024
প্রসঙ্গত, আসলে টাইপ ওয়ান মোকাবিলায় বিপ্লব এনেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। তিন বছর আগে এসএসকেএম হাসপাতালে একটি পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়। সিরিঞ্জের বদলে ইনসুলিন পেনের সাহায্যে ইনসুলিন প্রবেশ করানো শুরু হয় শরীরে। এরপর গত দু’বছরে পাঁচটি জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয় এই প্রকল্প। জেলা হাসপাতালগুলিতে স্পেশালিটি ডায়েবেটিক ক্লিনিক খোলা হয়। ষেখানে কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ এন্ডোক্রিনোলজিস্টরা গিয়ে হাতেকলমে জেলার ডাক্তারবাবুদের টাইপ ওয়ান চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। জেলা হাসপাতালে ইনসুলিন সরবরাহের ‘কোল্ড চেন’ তৈরি করা হয়। এইচবিএ১সি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এবার আরও দশটি জেলা হাসপাতালে টাইপ ওয়ান চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারিত হচ্ছে। এমনটাই জানালেন ‘ডায়াবেটিস অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড ইউ’-র সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ মজুমদার।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের এই রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ এই রোগের কবলে রয়েছে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ থেকে শুরু করে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ পর্যন্ত হতে পারে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। যে কারণে আলাদা করে ইনসুলিন নিতে হয়। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, দ্য ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজির রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, চীন, জার্মানি, স্পেন, কানাডা, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং সৌদি আরবে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
Be the first to comment