ফের গো রক্ষকদের তাণ্ডব দেখা গেল উত্তরপ্রদেশের। তবে তাদের শিকার এবার বছর সত্তরের এক বৃদ্ধ। এবং বৃদ্ধর দাবি তিনি একজন উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ।
উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলার লক্ষণপুর গ্রামের বাসিন্দা কৈলাশ নাথ শুক্লা। নিজের অসুস্থ গরুকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ে নন্দপুর গ্রামের কাছে তাঁর পথ আটকায় একদল গো রক্ষক। অভিযোগ, এরপরেই আচমকা তাঁকে মারধর করতে শুরু করে ওই গো রক্ষকের দল। তাদের দাবি, ৩০ অগস্ট পাশের গ্রামের এক মুসলিম ব্যক্তিকে নিজের গরুটি নাকি বেঁচে দিয়েছেন কৈলাশবাবু। এবং সেখানেই গরুটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদিও ওই অসহায় বৃদ্ধ বারবার গো রক্ষকদের জানানোর চেষ্টা করেছিলেন যে তিনি একজন ব্রাহ্মণ। এবং তিনি শুধুই তাঁর অসুস্থ গরুটিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে বৃদ্ধের কথায় বিশেষ পাত্তা দেয়নি গো রক্ষকরা।
মুসলমান ব্যক্তিকে গরু বিক্রির অভিযোগে ওই বৃদ্ধের উপর অত্যাচার চালায় গো রক্ষক বাহিনী। প্রথমে তাঁকে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বেধড়ক মারধরও করা হয় তাঁকে। এখানেই শেষ নয়। ওই বৃদ্ধ অভিযোগ করেছেন, উন্মত্ত গো রক্ষকরা তাঁর মাথা মুড়িয়ে দেয়। তাঁর মুখে কালিও লেপে দেওয়া হয়। এরপর দড়ি দিয়ে বেঁধে তাঁকে গোটা গ্রাম গ্রাম ঘোরানো হয়। সঙ্গে চলতে থাকে গো রক্ষকদের হুঙ্কার। রীতিমতো আশেপাশের সবাইকে হুমকি দিয়ে ওই গো রক্ষক বাহিনী বলে, অন্য কেউ গরুর অপমান হয় এমন কোনও কাজ করলে তাঁর সঙ্গেও এমনই হবে।
এরপর স্থানীয় থানায় যান ওই বৃদ্ধ। কিন্তু প্রাথমিকভাবে তাঁর এফআইআর নেয়নি পুলিশ। পরে এই খবর পৌঁছয় বলরামপুরের এসপি রাজেশ কুমারের কানে। তখন তিনি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে চার জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আপাতত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই বৃদ্ধ। এসপি রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকী যেই পুলিশকর্মী এফআইআর নিতে অস্বীকার করেছেন তার বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে তদন্ত।তিনি আরও জানিয়েছেন, দোষী প্রমাণিত হলে, দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।
Be the first to comment