তৃণমূলের তারকা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর তৎপরতার জেরেই পর্দা ফাঁস হয়েছে ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের। এরপর থেকে দেবাঞ্জন দেবের একের পর এক কীর্তি বেরিয়ে আসছে। গত মাসে কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্পে টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মিমি। আপাতত সুস্থ রয়েছেন অভিনেত্রী। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করে পুলিশ জানিয়েছে ইতিমধ্যেই এই মামলায় মিমি চক্রবর্তীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি নথিভুক্ত হয়েছে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন এবং বিধায়ক লাভলি মৈত্রর বয়ানও।
পাশাপাশি আরও জানা গিয়েছে, সিরাম ইনস্টিটিউট ইনস্টিটিউট জেনারেল ম্যানেজারকে সমন পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ, কারণ এই সংস্থা থেকে ভ্যাকসিন নিতে ই-মেল করেছিল ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব। একাধিক ভুয়ো ই-মেল তৈরি করেছিল দেবাঞ্জন, সেই সংক্রান্ত তথ্য পেতে বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন সংস্থা গুগলকেও চিঠি দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন প্রকাশ্যে আসেন ভ্যাকসিন প্রতারণার শিকার হয়েছেন মিমি চক্রবর্তী। ২২ তারিখেই কসবার ক্যাম্পে ভুয়ো করোনা টিকা নেন যাদবপুরের সাংসদ। মিমিকে জানানো হয়েছিল জয়েন্ট কমিশনার অফ কেএমসির উদ্যোগে ওই ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। মিমি সংবাদমাধ্যমকে সেই সময় জানান, ‘গোটা বিষয়টা প্রোমোট করতে আমি পৌঁছেছিলাম, ওখানে নিজেও ভ্যাকসিন নিই। কিন্তু তারপর থেকেই ফোনে কোনও মেসেজ না আসায় আমার খটকা লাগে। সার্টিফিকেট চাইলেও ওরা জানায় বাড়িতে পৌঁছে যাবে কিন্তু আসেনি। পরে অফিসের লোক গিয়ে খোঁজ করায় বলে তিন চারদিন সময় লাগবে। এরপরই বুঝি নিশ্চয় বিষয়টার মধ্যে অন্য কোনও ব্যাপার আছে’। এরপরই মিমি প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করে দেবাঞ্জনের জালিয়াতি প্রকাশ্যে চলে আসে।
শহরজুড়ে প্রতারণার যে কালো জাল বিস্তার করেছিলেন দেবাঞ্জন, সেই সব মামলা এক এক করে সকলের সামনে আসছে। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় মোট ৫০ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। এই প্রতারণা চক্রে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা লেনেদেনে বিষয়টিও আদালতকে জানিয়েছে তদন্তকারীরা।
ভুয়ো ভ্যাকসিকাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে ইতিমধ্যেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে হাইকোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বেআইনিভাবে নীলবাতির গাড়ির যে ব্যবহার হচ্ছে সেই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
Be the first to comment