নববর্ষের শুরুতেই দুঃসংবাদ। ১ জানুয়ারি মধ্যরাতে জম্মুর বৈষ্ণদেবী মন্দিরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ১৩ জন ভক্তের। আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। জানা গিয়েছে, শনিবার মধ্যরাত ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ কাটরার বৈষ্ণদেবী মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েন একাধিক ভক্ত। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আর তাতেই পদপিষ্ট হন অনেকে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় নারায়ণী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা ঘটনার জেরে আপাতত মন্দিরে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মন্দির চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
ত্রিকূট পর্বতের উপর জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার কাটরায় অবস্থিত এই বৈষ্ণদেবী মন্দির। প্রতি বছরের মতো এ বছরও নববর্ষের শুরুতে পুজো দিতে ভিড় জমিয়েছিলেন অগনিত মানুষ। কিন্তু, আচমকাই মধ্যরাতে গর্ভগৃহের বাইরে পুজোর লাইনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একদল পুণ্যার্থী নিজেদের মধ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন বলে জানা যাচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে পায়ের চাপে আহত হন বহু মানুষ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ১২। আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে খবর।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের DG দিলবাগ সিং প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছেন, মধ্যরাতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শনার্থীদের দুই দলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। যা ক্রমে হাতাহাতিতে গড়ায়। পরস্পরের দিকে তারা উত্তেজিত হয় তেড়ে যান। যার ফলে পদপিষ্ট হওয়ার এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটে শোকপ্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’ ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটান্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা ও আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। এছাড়াও জম্মু-কাশ্মীদেরর লেফটান্যান্ট গভর্নরের পক্ষ থেকে মৃতের পরিবার পিছু ১০ লাখ এবং আহতদের জন্য ২ লাখ করে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন।
শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
উল্লেখ্য, বৈষ্ণদেবী মাতার দর্শনের জন্য কাটরা থেকে হেঁটে পাহাড়ি পথে প্রায় ১৪-১৫ কিলোমিটার যান পুণ্যার্থীরা। অনেকেই ওই পথ খচ্চরের পিঠে চেপে যান। তবে এখন পাহাড়ি পথের প্রায় পুরোটাই গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছে। খাদের দিকে রেলিং এবং জাল দিয়ে ঘেরা। যদিও মন্দিরের ভেতরের পথ অনেকটাই সংকীর্ণ। সেখানে সাধারণ মানুষকে হেঁটেই প্রবেশ করতে হয়। প্রতিবছরই নববর্ষের শুরুতে ভিড় থাকে এই মন্দিরে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সংকীর্ণ পথে ধাক্কাধাক্কির জেরেই ভক্তরা গুরুতর আহত হন।
Be the first to comment