বামেদের যেন মতিভ্রম না হয়, তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে আবেদন ক্ষিতি-কন্যার

Spread the love

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় রয়েছে একাধিক নেতা- নেত্রীর সন্তান বা আত্মীয়দের নাম। তবে শুক্রবার সন্ধেয় কালীঘাট থেকে প্রকাশ হওয়া সেই তালিকায় যাঁর নাম দেখে চমকে গিয়েছেন অনেকেই, তিনি বসুন্ধরা গোস্বামী। প্রয়াত বাম নেতা তথা বাম আমলের মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরাকে টিকিট দিয়েছেন মমতা। যদিও তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বা ঘনিষ্ঠতা নতুন নয়, তবু এবার পুরভোটে অবশ্যই নজরে থাকবেন বাম নেতার মেয়ে। তালিকা প্রকাশের পর তিনি জানালেন, বামেদের কাছেও তাঁর আবেদন থাকবে, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক যাতে ভালো করে নেন তাঁরা।

বাম নেতার মেয়ে তথা তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, বিজেপিকে রুখতে রাজনৈতিক অবস্থানে বদল প্রয়োজন বামেদের। কী বলবেন তিনি বামপন্থী নেতাদের? বসুন্ধরা বলেন, আবেদন করব যাতে মতিভ্রম না হয়। বলব তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করে নিতে। রাজনৈতিক অবস্থান দিনে দিনে হাস্যকর হয়ে উঠছে সিপিএমের পক্ষে।’ তাঁর দাবি, শিয়রে যখন বিজেপি, তখন এত বাছবিচার করার কোনও যুক্তি নেই।

তবে প্রার্থী হওয়া নিয়ে যে কিছুটা দ্বিধা ছিল সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। বসুন্ধরার জানান, প্রথমে ভয় পেয়েছিলে তিনি। ঠিক করছেন কি না, আদৌ যোগ্য কি না, এ সব ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার তাঁকে প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানান ক্ষিতি-কন্য। কলকাতা পুরসভার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁকে প্রার্থী করেছে ঘাসফুল।

বাম নেতার মেয়ে তৃণমূল প্রার্থী, স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টা অস্বস্তিতে ফেলেছে বাম শিবিরকে। তাই বসুন্ধরাকে নিয়ে প্রশ্নে কিছুটা বিরক্তই হলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। নাম শুনেই বললেন, ‘ওর মেয়েকে আমি চিনি না।’ বসুন্ধরার প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সূর্যকান্ত বললেন, আমি বলব কি করে? আমি ওর অভিভাবক নই।’

বসুন্ধরাকে অস্বস্তি অবশ্য প্রথম নয়। ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর প্রয়াত হন বাম আমলের মন্ত্রী আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চেই শোনা যায় প্রয়াত নেতার কন্যা বসুন্ধরা গোস্বামী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বসুন্ধরা এর আগে কোনও দিনই সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না। বামফ্রন্টের সঙ্গেও যুক্ত থাকেননি কোনওদিনই। তবে তৃণমূলে যোগ দিলেও খুব একটা ময়দানে নেমে রাজনীতি করতে বসুন্ধরাকে দেখা যায়নি। সেই বসুন্ধরাই হঠাৎ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন গত অগস্টে। সে সময় জাগো বাংলার হয়ে কলম ধরেছিলেন অপর বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তা বিশ্বাস। জাগো বাংলায় প্রতিবেদন লিখে অজন্তা যখন রোষের মুখে, বসুন্ধরা তখন লিখেছিলেন, ‘অজন্তা এটা লিখে কোনও ভুল করেননি। জাগো বাংলায় সম্পাদকীয় বিভাগও অজন্তার লেখায় বামপন্থীদের অংশ অটুট রেখে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*