ভাটপাড়া কান্ডের জেরে ব্যারাকপুর ও বনগাঁয় বন্ধ করে দেওয়া হলো ইন্টারনেট পরিষেবা

Spread the love

ভাটপাড়ায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। কেউ যাতে প্ররোচনা বা গুজব ছড়াতে না পারে তার জন্যই রাজ্য প্রশাসনের তরফে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক যে নির্দেশিকা জারি করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, বারাকপুর, বসিরহাট, বনগাঁ মহকুমায় ইন্টারনেট পরিষেবা শুক্রবার মাঝরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে, বারাকপুর মহকুমার মধ্যে থাকা দমদম থানা, বিমানবন্দর থানা, এনএসসিবিআই এয়ারপোর্ট থানা এলাকাকে এই নির্দেশিকার বাইরে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে আজও থমথমে ভাটপাড়া। বন্ধ দোকান-বাজার, ফাঁকা রাস্তাঘাটও। ভাটপাড়া ও জগদ্দলে জারি ১৪৪ ধারা। ভাটপাড়ার মোড়ে মোড়ে পুলিশ পিকেট, রাস্তায় র‍্যাফ, চলছে পুলিশের কড়া টহলদারি। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ফের রণক্ষেত্রর রূপ নেয় ভাটপাড়া। এলাকা দখল ঘিরে দুষ্কৃতী তাণ্ডবে নিহত ৩। আহত চার। চলতে থাকে দফায় দফায় বোমাবাজি ও গুলির লড়াই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস, শূন্যে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র‍্যাফ।

জানা গিয়েছে, এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ভাটপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের। তার আগেই ফের দুষ্কৃতী তাণ্ডবে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল এলাকা। বৃহস্পতিবার, বেলা ১০টায় নতুন তদন্তকেন্দ্র উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিল পুলিশ। বেলা ১১ টায় তদন্তকেন্দ্র উদ্বোধন করতে আসার কথা ছিল রাজ্য পুলিশের ডিজির। আচমকা ভাটপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পিছনের রাস্তায় শুরু হয় বোমাবাজি। ২০ নম্বর গলি থেকে মুহুর্মুহু উড়ে আসতে থাকে বোমা। আধঘণ্টা ধরে কাঁকিনাড়া স্টেশন, ভাটপাড়া পুরসভা সংলগ্ন বিভিন্ন বস্তি এলাকায় বোমাবাজি চালায় মুখ-ঢাকা দুষ্কৃতীরা। চলে গুলিও।

পুলিশকে লক্ষ করে বোমা, গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। গণ্ডগোল থামাতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। চলে কাঁদানে গ্যাস। দুষ্কৃতীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোঁড়ে পুলিশ। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। মৃত্যুও হয়। জখমও হন বেশ কয়েকজন। ঘণ্টা তিনেক তাণ্ডবের পর চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এলাকা থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা। ঘটনা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জগদ্দল ও ভাটপাড়ায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাজ্য প্রশাসন। কড়া হাতে ভাটপাড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা। এডিজি সাউথ বেঙ্গল সঞ্জয় সিংকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে। বারাকপুরে ডিসি স্পেশাল ব্রাঞ্চ করে পাঠানো হয়েছে প্রশান্ত কুমার চৌধুরীকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রও ভাটপাড়ায় যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই বাড়তি পুলিশ বাহিনী এলাকায় পাঠানো হয়েছে। গন্ডগোলের জেরে উদ্বোধন থমকে গেলেও ভাটপাড়া থানা কাজ শুরু করেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*