আট পুলিশকর্মীকে খুনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে রয়েছে ৬০টি মামলা। অবশেষে এনকাউন্টারে খতম সেই বিকাশ দুবে। তবে আজ নয়, বহু আগে থেকেই অপরাধ জগতে শোনা যায় বিকাশ দুবের নাম। সেই ১৯৯০ থেকে শুরু। একাধিক অভিযোগ থাকা সত্বেও বারবার বেকসুর খালাস হয়ে যেত কানপুরের বিকাশ।
উত্তরপ্রদেশের বিখরু গ্রামের বাসিন্দা। খুব কম বয়সেই এইসব কাজে নাম লেখায় সে। তৈরি করছিল নিজের দলও। ১৯৯০ সালে প্রথম বিকাশ দুবের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। খুন, ডাকাতি, অপহরণ, জমি দখলের মতো একাধিক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
২০০৬ সালে একটি সাক্ষাৎকারে বিকাশ বলেছিল, গরীবদের সাহায্য করতেই নাকি এসব কাজ করত সে। গরীবদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা। বিকাশ দুবের সমস্ত অপরাধ সম্পর্কেই জানতেন তার স্ত্রী রিচা দুবে।
২০০১ সালে শিরোনামে আসে এই বিকাশ দুবে। উত্তরপ্রদেশে তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন রাজনাথ সিংহ। কানপুরের শিবলি থানার ভিতরে বিজেপি নেতা সন্তোষ শুক্লকে তাড়া করে ঢুকে পড়ে বিকাশ দুবে। সন্তোষ শুক্ল তখন রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর সমান মর্যাদাপ্রাপ্ত সরকারি পদে ছিলেন। থানায় অফিসার-হাবিলদার মিলিয়ে ২৫ জন পুলিশকর্মী। তাঁদের সামনেই বিকাশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় সন্তোষের দেহ।
চার মাস পরে বিকাশ যখন আত্মসমর্পণ করল, তখন তার চারপাশে কানপুরের অনেক রাজনৈতিক চরিত্র। আদালতে ২৫ জন পুলিশকর্মীর এক জনও সাক্ষ্য দিতে চাননি। আদালত প্রমাণের অভাবে বিকাশকে ছেড়ে দেয়। এতটাই প্রভাবশালী গ্যাংস্টার ছিল এই বিকাশ দুবে।
২০২০ সালে ফের গ্রেফতার হয় বিকাশ দুবে। কানপুরে ৮ জন পুলিশকে খুনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কানপুরকাণ্ডের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় মহাকালের মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয় দুবে। শুক্রবার সকাল ১০টায় কোর্টে পেশ করার কথা ছিল বিকাশকে। এদিন সকালে উজ্জয়িনী থেকে আনার পথে কানপুরের কাছে ভউতীতে কনভয়ে থাকা বিকাশের গাড়ি উল্টে যায়।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ সূত্রে দাবি, গাড়ি উল্টে যাওয়ার পর বিকাশ এক এসটিএফ কর্মীর পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু বিকাশ গুলি চালাতে শুরু করে। শুরু হয়ে যায় বিকাশ দুবের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। পুলিশ সূত্রে দাবি, সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয় বিকাশ। তার বুকে ও কোমরে গুলি লাগে। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
Be the first to comment