ছাত্রমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের বাড়ির সামনের আন্দোলন আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। তবে ছেলের মৃত্যুর কিনারার জন্য এবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁর বাবা।
উপাচার্য আটক ছাত্রছাত্রীদের হাতে। তাঁর আবেদনে অনুগত অধ্যাপক, কর্মীরা ছাত্র আন্দোলন তুলতে এসে আটক হলেন পুলিশের হাতে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সরকারি বাসভবনের সামনে। পরে আটকদের ছেড়ে দেয় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। আন্দোলরত ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, তাঁদের ভয় দেখাতে উপাচার্য অনুগতদের ডেকে ছিলেন। এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে। এদিকে মৃত ছাত্রের বাবা সঞ্জীব দাস পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন।
ছাত্র মৃত্যুকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। দোষীদের শাস্তি চাই এবং উপাচার্যকে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবে- এই দুই দাবিতে উপাচার্যের বাড়ির সামনে আন্দোলন শুরু করেন মৃত ছাতের পরিবার এবং আত্মীয়রা। পরে এই আন্দোলনে যোগ দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআইয়ের বিশ্বভারতী ইউনিট। তারাও মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে উপাচার্যের সরকারি বাসভবনের সামনে অবস্থা বিক্ষোভে বসে।
শুক্রবার সন্ধেয় অসীম দাসের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর শান্তিনিকেতনে আসতেই এলাকার পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে ওঠে। মৃতদেহ উপাচার্যের বাড়ি, শান্তিনিকেতন থানা হয়ে নিয়ে আসা হয় উপাসনা গৃহের সামনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো, কিশোর ভট্টাচার্য পাঠভবনের শিক্ষক-সহ বিভিন্ন ভবনের অধ্যক্ষ এবং পাঠবভনের ছাত্রছাত্রীরা। কর্মসচিব-সহ অন্যরা মৃত অসীমকে মাল্যদান করলেও উপাসনা গৃহ যাওয়ার বড় গেটের ভিতর থেকে সহপাঠীকে ভালবাসা জানান পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীরা। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কিছু লুকোতে চাইছে। তাই পাঠভবনের ছাত্রছাত্রী এবং অসীমের সহাপাঠীদের সংবাদমাধ্যাম এবং আশ্রমিকদের সামনে আসতে দিতে চাইছে না।
এদিকে উপাসনা মন্দির থেকে উপাচার্যের বাড়ির গেটের সামনে ছাত্রের মৃত দেহ আসতেই গেটের তালা ভেঙে উপাচার্যের বাড়ির সামনের রাস্তায় চলে আসে ছাত্রছাত্রীরা এবং অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। সূত্রের খবর, উপাচার্য তাঁর অনুগতদের মেসেজ করে জানান, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ভবনের অধ্যক্ষ, কয়েকজন অধ্যাপক এবং কর্মী পৌঁছান উপাচার্যর বাড়িতে। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, উপাচার্যের অনুগতরা তাঁদের হুমকি দিতে থাকেন উঠে যাওয়ার জন্য। পরিস্থিতি উতপ্ত হতেই একাধিক অধ্যাপক, কর্মীদের আটক করে শান্তিনিকেতন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাতেই অনেককে ছেড়ে দিলেও শনিবার সকাল পর্যন্ত থানায় আটক থাকে শিক্ষাসত্রের শিক্ষক গৌতম সাহা এবং কর্মী রাজীব ঝাঁ। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আপাতত আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment