রোজদিন ডেস্ক:-
পুজোর আগেই বৃষ্টির ভ্রুকুটি। নিম্নচাপের কারণে মাটি হতে পারে উৎসবের আনন্দ। আগামী সোমবার বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে জানায় আলিপুর হাওয়া অফিস। তবে সেটি কতটা শক্তিশালী হবে, তার অভিমুখ কোন দিকে থাকবে, তা এখনই স্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আবহবিদেরা।
অক্টোবরের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে বৃষ্টি বাড়তে পারে বাংলায়। অর্থাৎ পুজোর মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। কারণ নতুন করে নিম্নচাপের আশঙ্কা রয়েছে উত্তর আন্দামান সাগরে। শনিবার তৈরি হবে ঘূর্ণাবর্ত। এই ঘূর্নাবর্ত ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে আগামী সোমবার। উত্তর পশ্চিম এবং মধ্য বঙ্গোপসাগরে এই নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। যদিও এখনও পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের জন্য কোনও সতর্কবার্তা নেই।
আগামী রবি ও সোমবার নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম সহ বেশকিছু জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির আশঙ্কা। ওড়িশা সংলগ্ন এবং উপকূলের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তবে তার আগে রোদ ঝলমলে পরিবেশ। কোথাও কোথাও আংশিক মেঘলা আকাশের সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই চলতি সপ্তাহে।
উত্তরবঙ্গেও কোথাও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারে হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার, দুই দিনাজপুর এবং মালদহের আবহাওয়া মোটের উপর শুকনো থাকবে বলে জানানো হয়েছে। শুক্রবার সারা দিনে কলকাতার আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩৩ ডিগ্রি এবং ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি বেশি থাকায় দিনের বেলায় অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে।
নিম্নচাপের প্রভাবে গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে ভিজেছে দক্ষিণবঙ্গ। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে খানিক বদলেছে হাওয়া। বিগত কয়েক দিন ধরেই নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল ছিল। পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ এবং ওড়িশা উপকূল-সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বইছিল ঝোড়ো হাওয়া। তবে সোমবার রাত থেকে পরিস্থিতি বদলেছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আপাতত শান্তই থাকবে সমুদ্র।
নিম্নচাপের জেরে যে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে, তা বন্ধ হয়েছে। আগের তুলনায় পরিমাণ অনেকটা কমলেও বৃহস্পতিবার রাতেও পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে মোট ৫০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। দুই মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ অংশ এখনও জলের তলায়। মোটের উপর শুকনো আবহাওয়া থাকলে আর জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমলে বন্যা পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু আগামী সপ্তাহের গোড়ায় নতুন নিম্নচাপ তৈরি হলে তার জেরে হওয়া বৃষ্টিতে ফের রাজ্যের একাংশ প্লাবিত হবে কি না, তা নিয়েও আশঙ্কাও ঘনাচ্ছে।
Be the first to comment