শীত যেতে না যেতেই তাপপ্রবাহে জ্বলছে দেশের বিস্তীর্ণ অংশ। ৪২-৪৩ ডিগ্রির গরমে পুড়ছে একের পর এক রাজ্য। মৌসম ভবনের রিপোর্ট, ১২২ বছরে মার্চে এত গরম আর কখনও পড়েনি দেশে। মন্দের ভাল কী জানেন? সেই ভয়াবহ গরমের আঁচ পোহাতে হয়নি বাংলাকে। হ্যাঁ, এখনও তাপপ্রবাহ-মুক্ত আমাদের রাজ্য। কলকাতার তাপমাত্রাও রাজকোট বা বারাণসীর চেয়ে অনেক কম। কোন মন্ত্রে রক্ষা? সামনে কী পূর্বাভাস? দেশে মার্চেই মে মাসের গরম। শীত যেতে না যেতেই তাপপ্রবাহের আগুনে পুড়ছে উত্তর, পশ্চিম, মধ্য ভারতের একাধিক রাজ্য।
এ বছর মার্চে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তালিকায় দ্বিতীয় ২০১০ গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.০৯ ডিগ্রি। কেন এত তাড়াতাড়ি, এত গরম পড়ল দেশে? মৌসম ভবন বলছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এসেছে, কিন্তু কোনওটাই তেমন জোরালো নয়। ফলে গোটা মার্চে দেশে তেমন বৃষ্টিই হয়নি। ঝড়-বাদলাও অমিল। সেই সুযোগে থাবা বসিয়েছে তাপপ্রবাহ।
বৃষ্টি অবশ্য বাংলাতেও হয়নি। হয়নি কালবৈশাখীও। তবু বাংলার রেহাই। অস্বস্তিকর গরম রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আর যাই হোক, তাপপ্রবাহে পুড়তে হয়নি একদিনও। তথ্য দেখলেই স্পষ্ট। শনিবারের তাপমাত্রার তালিকায় সর্বোচ্চ গুজরাতের ভুজ ৪৩.৪ ডিগ্রি সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় তাপমাত্রা ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মহারাষ্ট্রে নাগপুরে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তুলনামূলক বিচারে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের তাপমাত্রা ৩৪.৪ সেলসিয়াস। আলিপুরে তাপমাত্রা ৩২.৮ ডিগ্রি।
শুধু শনিবার নয়, গোটা মার্চেই ছিল এক ছবি। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একদিনও ৩৭ ডিগ্রি পেরোয়নি। অথচ, গত দু’দশকের মধ্যে একাধিকবার মহানগরের পারদ ৩৯-৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। হ্যাঁ, মার্চেই। ৪৩ ডিগ্রির গরমও সয়েছে বাঁকুড়া-বীরভূম। কোন মন্ত্রে রক্ষা তাহলে? আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, যে উচ্চচাপ বলয় গরম হাওয়া পাঠায়, তার অবস্থান আরব সাগরের দিকে ফলে বাংলা পর্যন্ত উত্তর ভারতে ‘লু’ এসে পৌঁছয়নি।
আন্দামান লাগোয়া বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের ঠেলায় ক্রমাগত ঢুকছে জলীয় বাষ্প। এর ফলে উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি, দক্ষিণে মেঘলা আকাশ। মার্চে বঙ্গোপসাগরের জোড়া নিম্নচাপেও জলীয় বাষ্প ঢুকেছে বাংলার অন্দরে। তাই আগামী কয়েকদিনের মধ্যেও তাপপ্রবাহের আশঙ্কা নেই। বাংলার জন্য এপ্রিল নিয়েও ভাল খবর। তবে এটা ঠিক, জলীয় বাষ্প ঢুকছে, অথচ, বৃষ্টি না হওয়ায় অস্বস্তিকর গরম থাকবে। তার থেকে কিন্তু রেহাই নেই।
Be the first to comment