রোজদিন ডেস্ক:-
রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক। ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর তকমা পেল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের লালবাগের বড়নগর গ্রাম। কেন্দ্রের পর্যটন মন্ত্রকের কৃষি-পর্যটন প্রতিযোগিতায় ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর তকমা পেল বাংলার এই গ্রাম। এক্স হ্যান্ডলে এই সুখবর জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে কেন্দ্রের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর পুরস্কার বাংলার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই জানান তিনি।
রাজ্যবাসীকে এই সুখবরটা সবার আগে জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের মধ্যে কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের আয়োজিত সেরা গ্রামীণ পর্যটন প্রতিযোগিতায় ‘সেরা পর্যটন গ্রামে’র তকমা পেয়ে গেল মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ মহকুমার জিয়াগঞ্জ ব্লকের বড়নগর গ্রামখানি যা আজিমগঞ্জ শহরের পাশেই গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করে জানান যে, ‘আমি এটা জানাতে পেরে আনন্দিত যে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়নগর গ্রামকে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক কৃষি-পর্যটন বিভাগে সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে নির্বাচিত করেছে।’ জানা গিয়েছে, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসে বড়নগর গ্রামকে এই পুরস্কার দেবে কেন্দ্র।
এদিন ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের তরফে রাজ্য সরকারকে বড়নগর গ্রামের পুরষ্কার প্রাপ্তির কথা জানানো হয়। এরপরই খুশির এই খবর সোশ্যাল মাধ্যমে সকলের সঙ্গে শেয়ার করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবেশ, শিক্ষা-পর্যটন সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে প্রতি বছরই দেশের একটি গ্রামকে সেরা পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতি দেয় কেন্দ্র। গত বছরও এই স্বীকৃতি এসেছিল বাংলার ঝুলিতে। ২০২৩ সালে ভারতের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে মুর্শিদাবাদেরই কিরীটেশ্বরী গ্রামকে স্বীকৃতি দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার সেই স্বীকৃতি পেল ওই জেলারই বড়নগর গ্রাম। নটোরের রানী ভবাণী এই মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন। সেই সব মন্দিরের মধ্যে চারবাংলা মন্দিরগুচ্ছ সব থেকে বেশি আকর্ষণীয়। মন্দিরের গাত্রে থাকা টেরাকোটার কাজ আজও বেশ আকর্ষণীয় হয়ে রয়েছে। রামায়ণ ও মহাভারত ছাড়াও পুরাণের নানা ঘটনা সেখানে স্থান পেয়েছে। চার বাংলা মন্দির গুচ্ছের মধ্যে রয়েছে, ভবাণীশ্বর মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির প্রমুখ।
বড়নগর গ্রামখানিকে অনেকেই চিহ্নিত করেন মুর্শিদাবাদ জেলার ‘বারাণসী’ হিসাবে। রানী ভবাণী তাঁর শেষজীবন এই গ্রামেই অতিবাহিত করেছিলেন। বড়নগর গ্রামের বাসিন্দারা শাড়ি বোনার কাজে রীতিমত খ্যাতি পেয়েছেন। বালুচুরি, জামদানি ও টাঙাইল শাড়ি তৈরি হয় এই গ্রামে। পাশাপাশি এই গ্রামের বাসিন্দারা বাঁশের তৈরি নানা শিল্পকর্ম, মাটির তৈরি নানা শিল্পকর্ম তৈরি করেন ও গ্রামে আসা পর্যটকদের কাছে তা বিক্রি করে আয় নির্বাহ করেন। গ্রামের স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর সদস্যরা দুধের তৈরি নানা খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করে যেমন সাবলম্বী হয়েছেন তেমনি আধুনিকরা স্রোতে ভেসে জ্যাম, জেলি তৈরি করে তা বিক্রিও করেন। গ্রামে পর্যটকদের থাকার জন্য বেশ কিছি হোম-স্টেও রয়েছে।
Be the first to comment