২০২৩ সালের জন্য রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। চমকপ্রদভাবে খসড়া তালিকায় ভোটারের সংখ্যা কমে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা তালিকা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রাজ্যের ভোটার সংখ্যা ৭ কোটি ৪২ লক্ষ ৮৮ হাজার ২৩৩ জন। ২০২২ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৭ কোটি ৪৩ লক্ষ ৮১০। অর্থাৎ একবছরে ভোটারের সংখ্যা বাড়ার বদলে ১২ হাজার ৫৭৭ জন কমে গিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিবছরই ভোটার তালিকায় সংশোধন করা হয়। তবে এভাবে ভোটার সংখ্যা কমে যাওয়াটা কার্যত নজিরবিহীন। কমিশনের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে নতুন ভোটার হিসাবে নাম নথিভুক্ত করেছেন ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৫৭ জন। আর ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪৩৪ জনের নাম। এদের মধ্যে অনেকেই মৃত। তবে সকলে নয়। কমিশন সূত্রের দাবি, ভোটার তালিকা ঝাড়াই-বাছাই করে বেশ কিছু অস্তিত্বহীন ভোটারের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। সেকারণেই ভোটার সংখ্যা কমেছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গত সপ্তাহেই সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। সেখানে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে সরব হয়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার ভুয়ো ভোটার নিয়ে সরব হয়েছেন। কমিশন খসড়া তালিকা প্রকাশের পর বিরোধীদের সেই অভিযোগ মান্যতা পেল বলে দাবি তাঁদের। যদিও খসড়া তালিকায় ভোটার সংখ্যা কমে যাওয়াটাকে বিজেপিরই ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে রাজ্যের শাসকদল। বুধবারই কৃষ্ণনগরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “বিজেপি অনেক জায়গায় ৩০ শতাংশ ভোটারের নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের নিজেদের দেখতে হবে আপনার নাম ভোটার তালিকায় আছে কিনা। ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না। রেশন কার্ড থেকে নাম কেটে দেবে। ভোটার তালিকা থেকেও নাম কেটে দেবে।”
যদিও কমিশন জানিয়েছে, খসড়া এই ভোটার তালিকা নিয়ে কোনওরকম অভিযোগ থাকলে সেটা কমিশনকে জানানো যাবে। আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ নেওয়া হবে। প্রতি শনিবার ও রবিবার রাজ্যে মোট ৮টি বিশেষ শিবিরের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। সেই শিবিরে অভিযোগ জানানো যাবে। এছাড়া ১৯৫০ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেও অভিযোগ জানানো যাবে।
Be the first to comment