ভোট পরবর্তী হিংসায় রক্তাক্ত বাংলা। হিংসা থেকে বাদ থাকছেন না রাজ্যের মহিলারাও। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে মহিলা কমিশনের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত উত্তপ্ত। বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠছে। হামলার হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না বাড়ির মহিলারাও। নির্বাচনী পরবর্তী বাংলায় বেশ কিছু ধর্ষণেরও ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বিজেপির। রাজ্য সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও রিপোর্ট পাঠায়নি বলে খবর। এরপরই মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দলকে বাংলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখবেন। সূত্রের খবর, জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে এখনও পর্যন্ত শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের বক্তব্য, অনেক মহিলাই তাঁদের সামনে সত্য ঘটনা তুলে ধরতে ভয় পাচ্ছেন, তাঁরা আতঙ্কিত রয়েছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন তাঁরা।
বুধবারই পশ্চিম মেদিনীপুর গিয়েছিলেন। গোপনীয়তা বজায় রেখে যেখান থেকে অভিযোগ আছে, সেখান থেকে স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করছেন তাঁরা। যাঁদের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে, তাঁদের প্রত্যেকের স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছরে এ রকম বহু টিম বা মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের টিম এসেছে। তদন্তের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রিপোর্টও জমা দিয়েছে। তবে রাজ্য সরকার এবারও এই টিমকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই বিশ্লেষকদের মত।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তাপস রায় বলেন, “প্রতিনিধি দল আসছে, খুব ভাল কথা। তবে বিজেপির নির্দেশে যেন বেছে বেছে এলাকায় না যান। সব জায়গাতেই যেন যান আর সব অভিযোগ খতিয়ে দেখেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথগ্রহণের পরই নির্বাচনোত্তর হিংসা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করেছেন। প্রশাসনকে নির্দেশও দিয়েছেন।”
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদমর্যাদার চার আধিকারিকের একটি প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত জায়গায় নির্বাচন-পরবর্তী হিংসা হয়েছে সেখানকার বর্তমান অবস্থা কী, যাঁদের উপর হিংসা হয়েছে তাঁরা বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য তাঁরা এসেছেন। প্রয়োজন হলে তারা সরকারি আধিকারিক রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব অথবা রাজ্য পুলিশের ডিজি সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।
Be the first to comment