মৈনাক সাউ,
জিতলো ইংরেজরা। এটাকেই হয়তো বলে বিশ্বকাপ ফাইনালের চাপ। যা যে কোনও দলকেই এ ভাবে চাপে ফেলে দিতে পারে। যে চাপে পরে হেরে গিয়েছে ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো সাফল্যের চূড়ায় থাকা দল। সেখানে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। সেখান থেকে উঠে এসে লিগ পর্বে এক ও দুইয়ে শেষ করা দুটো দলকে রীতিমতো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেওয়া দুই দল ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। রবিবার লর্ডসে আগের রাত ও সকালের বৃষ্টির জন্য টস হতে ১৫ মিনিট দেরি হলেও ম্যাচে কোনওভাবে কোনও ব্যাঘাত ঘটায়নি প্রকৃতি। শেষ বেলায় ম্যাচটা বেশ টানটান হল। নিউজিল্যান্ডের টাইট ফিল্ডিংয়ে ইংল্যান্ডের রানের গতি কমলো। কিন্তু শেষ হাসি হাসলো হোম টিমই। রবিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ওপেন করতে নেমে মার্টিন গাপ্তিল ১৯ রান করেই আউট হয়ে যান। সেখান থেকে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে সঙ্গে করে আর এক ওপেনার হেনরি নিকোলস লড়াই শুরু করেন। অধিনায়ক উইলিয়ামসন ৩০ রানে আউট হওয়ার পর ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান হেনরিও।
এরপর রস টেলর ১৫, জেমস নিশাম ১৯, কলিন ডে গ্র্যান্ডহোম ১৬, ম্যাট হেনরি ৪ রান করে আউট হয়ে যান। তার মধ্যেই টম লাথাম ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন। যদিও বড় রানে পৌঁছতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। কিন্তু পুরো বিশ্বকাপে খুব বড় রান করেনি নিউজিল্যান্ড। তাতেই বাজিমাত হয়েছে। ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২৪১ রানই তুলতে পারে কিউইরা।
জবাবে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটাও ভাল হয়নি। সেমিফাইনালে সর্বোচ্চ রান করা জেসন রয় ১৭ রান করেই আউট হয়ে যান। আর এক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ৩৬ রান করে কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন। এর পর জো রুট ৭ ও ইয়ন মর্গ্যান ৯ রান করে আউট হয়ে যান। ফার্গুসনের যে দুরন্ত ক্যাচে মর্গ্যান আউট হন এই ম্যাচে সেটা একটা বড় প্রাপ্তি। সেখান থেকেই লড়াই শুরু করেন বেন স্টোকস ও জোস বাটলার। ৬০ বলে ৫৯ রান করে আউট হন জোস বাটলার। তাঁর জায়গায় নেমে ওকস আউট হন মাত্র ২ রান করেই । লিয়াম প্লাঙ্কেট ১০ বলে ১০ রান করে আউট হন। এর পরই নিশামকে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে ফেলেন স্টোকস। কিন্তু রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান জোফরা আর্চার। আদিল রশিদ কোনও রান না করেই রান আউট হয়ে যান। একইভাবে রান আউট হন মার্ক উডও। ৫০ ওভারে ইংল্যান্ড ২৪১-১০। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের টার্গেট ছিল ১৫ রান। সেটা একটা সময় এসে দাঁড়ায় দুই বলে তিন রানে। ম্যাচ ড্র হয়ে যায় ৫০ ওভারে। শেষ বলে দু’রান দরকার ছিল। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান মার্ক উড। সুপার ওভারে গড়াল ম্যাচ। প্রথমে ব্যাট করতে নামলো ইংল্যান্ডই। দায়িত্ব পড়লো বাটলার ও স্টোকসের উপর। সুপার ওভারে ইংল্যান্ড ১৬ রানের টার্গেট দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। আর সেখানেই বাজিমাত করলো ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডও ম্যাচ ১৫ রান করে ড্র করে দিয়েছিল। কিন্তু বাউন্ডারির হিসেবে জিতে গেলো ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাঙ্কেট। একটি করে উইকেট জোফরা আর্চার ও মার্ক উডের।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট নেন লকি ফার্গুসন ও জেমস নিশাম। একটি করে উইকেট নেন ম্যাট হেনরি, কলিন ডে গ্র্যান্ডহোম।
Be the first to comment