ভোটমুখী বঙ্গে ফের চমক। তৃণমূলে এবার যোগদান করলেন যশবন্ত সিনহা। তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী ছিলেন। শনিবার তৃণমূল ভবনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন এই প্রবীণ বিজেপি নেতা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্বেও ছিলেন যশবন্ত সিনহা। তিনি পথপ্রদর্শক হিসেবে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
এদিন সুদীপ, ডেরেক, সুব্রতর উপস্থিতিতে দলে যোগদান করেন তিনি। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে যোগদান করেন বিজেপিতে। বাজপায়ী সরকারের জমানায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রকেরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। এরপর তিনি দলত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সখ্যতা ছিল তাঁর।
এদিন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের দলে একজন মমতা যেমন আছেন, তেমন যশবন্ত সিন্হা এলেন। তৃণমূলে যোগ দিলেন যশবন্ত সিনহা। আমরা গর্বিত। তিনি শুধু বিহারের মানুষ না। তৃণমূল কংগ্রেসের পথ প্রদর্শক হিসেবে থাকবেন। জ্ঞান-বুদ্ধির পাশাপাশি ওর বিনম্রতা আমাদের ভাল লাগে। আজ গৌরবময় দিনের একটি। গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন নন্দীগ্রামে। তাই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারলেন না।
তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যতবার কঠিন পরিস্থিতি এসেছে ততবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। আজও ৪৫ মিনিট কথা হয়েছে তাঁদের। যশবন্ত সিনহার তৃণমূলে যোগদান ইতিবাচক হবে।
বাজপেয়ী সরকারের আমলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখনকার দল আর অটলজির সময়ের দলের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে ৷ মোদি-শাহ দিল্লি থেকে যেভাবে চালানোর চেষ্টা করছে, তা দেশের আমজনতা মেনে নেবে না ৷ বাংলার ভোট থেকেই তার শুরু হচ্ছে ৷
তোপ দাগলেন নির্বাচন কমিশনের উপরেও ৷ সরাসরি অভিযোগ তুলে বললেন, নির্বাচন কমিশন এখন আর স্বতন্ত্র সংস্থা নেই ৷ সংবিধানে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা বলা রয়েছে ৷ কিন্তু, এখন আদর্শ আচারণবিধির নামে নির্বাচন কমিশনের শাসন চলছে বলেও অভিযোগ করেন বর্ষীয়ান নেতা ৷ তাঁর মতে, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে ৷
এদিকে আজ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিজেপিকে একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে শুরু করেন যশবন্ত সিনহা ৷ বললেন, “সরকারের খামখেয়ালিপনার উপর বাধা দেওয়ার মতো কেউ আর নেই ৷ গণতন্ত্রের মানে শুধুমাত্র ভোট দেওয়া নয়, গণতন্ত্র মানে যে সরকার তৈরি হচ্ছে, তা সারাক্ষণ আমজনতার প্রতি তার কর্তব্য পালন করা ৷ আজ দেশের যা অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে কারও কিছু যায় আসে না ৷ অন্নদাতারা রাস্তায় বসে রয়েছেন, কিন্তু কারও কোনও হেলদোল নেই ৷ পরিযায়ী শ্রমিকরা যেভাবে পায়ে হাঁটে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন… সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে… সরকারের কিছু যায়-আসে না ৷” প্রশ্ন তুললেন দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়েও ৷
Be the first to comment