বয়স মাত্র সাত। মালিক ১৭৬ কোটি টাকার! উপার্জনের পথ ইউটিউব। শুনতে অবাক লাগলেও, এমনটাই সত্যি করেছে রায়ান। তা-ও আবার শুধুমাত্র নানা রকমের খেলনা দিয়েই ঘটেছে এই অবাক কাণ্ড। সাত বছরের এই শিশুর ইউটিউব চ্যানেল ‘রায়ান টয়েস’-এর বিপুল পরিমাণ ভিউ-ই এই এত টাকা আয়ের উৎস। যা কি না ছাড়িয়ে যেতে চলেছে বর্তমানে ইউটিউবের সেরা তারকা জ্যাক পলের চ্যানেলকেও!
ফোর্বস ম্যাগাজ়িনের অনুমান, আগামী বছরেই ইউটিউবের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় চ্যানেলের মালিক হয়ে উঠতে চলেছে রায়ান। ইতিমধ্য়েই আয়কর বা এজেন্টদের ফি ছাড়া রায়ানের আয় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং তা বেড়েই চলেছে চড়চড়িয়ে।
এই জনপ্রিয়তার কারণ কি? জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ছোট্ট রায়ানকেই। একটি সংবাদমাধ্যম তার কাছে জানতে চায়, শিশুরা রায়ানের ভিডিওগুলি এত কেন দেখে? রায়ানের উত্তর, ”কারণ আমি মজা করতে পারি।”
জানা গিয়েছে, রায়ানের বাবা-মা ২০১৫ সালে ছেলের ওই চ্যানেলটি তৈরি করে দেন। সেখানেই রায়ান খেলনা নিয়ে দেখা দিত মাঝামাঝে। এর পরেই ওই চ্যানেলের ভিডিওগুলোর ভিউ বাড়তে থাকে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ কোটি বার দেখা হয়েছে রায়ানের চ্যানেল। ওই চ্যানেলের১ কোটি ৭৩ লাখ ফলোয়ার রয়েছে।
‘ফোর্বস’ বলছে, ইউটিউবের ভিডিওগুলি শুরুর আগে যে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, তা থেকেই ১৬৬ কোটি টাকা আয় করেছে রায়ান। তার ভিডিওতে যেসব খেলনার বর্ণনা দেয় রায়ান, সে সব খেলনা খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। বাড়ে বিজ্ঞাপনও। অগাস্ট মাস থেকে আবার ‘রায়ানস ওয়ার্ল্ড’ নামে খেলনা আর পোশাকের বেশ কিছু আইটেম বিক্রি করতে শুরু করে ওয়ালমার্ট। ওয়ালমার্ট থেকে পাওয়া লভ্যাংশ সামনের বছর রায়ানের আয়ে যোগ হবে বলে বলছে ফোর্বস।
শিশু হওয়ার কারণে রায়ানের মোট আয়ের ১৫ শতাংশ একটি ব্যাংক একাউন্টে জমা করে রাখা হচ্ছে। যখন সে প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখনই এই টাকা তুলতে পারবে।
তবে ইন্টারনেটে খুবই পরিচিত মুখ হওয়া সত্ত্বেও রায়ানের পরিচয় নিয়ে রয়েছে রহস্য। তার পদবি কী, রায়ান কোথায় থাকে, কেউ জানে না। রায়ানের বাবা-মা খুব কমই সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে রায়ানের মা দাবি করেছেন যে, যখন তাঁর ছেলের বয়স মাত্র তিন বছর, তখন এই ইউটিউব চ্যানেল করার আইডিয়া রায়ানই দিয়েছিল।
ইউটিউবে রায়ানের প্রথম ভিডিওটি ছিল প্লাস্টিকের ডিম ভেঙে সেখান থেকে খেলনা বার করা। আশি কোটি বার এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে। তার ভিডিও চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রেখেছে এক কোটি মানুষ।
রায়ানের ভিডিওগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার স্বতস্ফূর্ততা। নিত্য নতুন খেলনা নিয়ে সে যেভাবে খেলে, সেটা মানুষ পছন্দ করে। সে কারণেই দিনে দিনে এত জনপ্রিয়তা বাড়ছে তার। এখন সাত বছরের ১৭৬ কোটি এভাবেই বাড়তে বাড়তে কোথায় গিয়ে থামে, সেটাই এখন দেখার।
Be the first to comment