রোজদিন ডেস্ক :- প্রধানমন্ত্রী শপথ গ্রহণের সাথে সাথে বাংলা থেকে মন্ত্রীত্ব পেলেন আরো দুই জন।
লোকসভা ভোটে প্রত্যাশিত ফল না মেলায় এবার রাজ্য সভাপতি বদলের পথে হাঁটতে চলেছে বিজেপি। সেজন্য বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সম্মানজনক বিদায়ের ব্যবস্থা করল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রবিবারই সুকান্তবাবু জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। যার ফলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদে রদবদল অবধারিত হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজেপির সংবিধান অনুসারে, কোনও ব্যক্তি একসঙ্গে ২টি পদে থাকতে পারেন না। ফলে সুকান্তবাবু মন্ত্রী হলে তাঁকে রাজ্য সভাপতি পদে ইস্তফা দিতেই হবে। ফলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি রদবদল এখন সময়ের অপেক্ষা।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদে বসেন সুকান্তবাবু। তাঁর তিন বছরের কার্যকাল শেষ হচ্ছে জুনেই। এর মধ্যে রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দেখা যায় সুকান্তবাবুকে। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, আমি মন্ত্রী হচ্ছি। এই প্রথম আমার জেলা থেকে কেউ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবনা বাস্তবায়িত করতে কাজ করব। তিনি আরও বলেন, আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। তাই কোন মন্ত্রক পেলাম সেটা বড় কথা নয়। দেশের জন্য কাজ করতে পারব সেটাই বড় কথা।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রথম বড় নির্বাচনেই হতাশাজনক পারফর্মেন্সে সুকান্তকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিতে চায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই তাঁর সম্মানজনক বিদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২১ সালে সুকান্ত মজুমদার রাজ্য বিজেপির সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলের অন্দরে পুরনো পন্থীদের বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দলের এই পুরনো নেতাদের অধিকাংশই হয় RSSএর নির্দেশে বিজেপিতে এসেছেন, নইলে RSSএর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তাদের। সেই নেতাদের সরিয়ে দেওয়ায় লোকসভা নির্বাচনে তারা বসে যান। সঙ্গে বসে যান সংঘের কর্মীরাও। যার জেরে বিজেপির অপ্রত্যাশিত ফল বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া সুকান্তবাবুর জমানায়, রাজ্য বিজেপিতে তৃণমূল থেকে আসা লোকেদের প্রভাব বেড়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদের বিশ্বস্ততা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। যার ফলে সুকান্তর নেতৃত্বে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চায় না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সুকান্তবাবুর মন্ত্রীত্ব লাভে রাজ্য বিজেপির সভাপতি কে হতে চলেছেন তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা।
এবারের লোকসভা নির্বাচন খুব হাইভোল্টেজ ছিল। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক ঝড়ে ২৯টি আসন তাদের দখলে আসে। এমন আবহে অনেকেই হেরে গেলেও শান্তনু ঠাকুর নিজের আসন বনগাঁ ধরে রাখলেন ভালভাবেই। মতুয়াদের আশীর্বাদ রয়েছে তাঁর সঙ্গে। বিজেপিও মনে করে মতুয়াদের ভোটব্যাঙ্ক শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গেই রয়েছে। তাই তাঁকে আবার মন্ত্রী করা হচ্ছে। যাতে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট থাকে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ রয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর কাছ থেকেই সঙ্ঘাধিপতির পদ ছিনিয়ে নেন শান্তনু বলে অভিযোগ। অন্যান্য হিন্দু দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে তফসিলি জাতি ভাগ করা আছে। মতুয়ারা তাঁর মধ্যে পড়েন। মতুয়াদের নিয়েই একটি ধর্মীয় শাখা গড়ে তোলেন সমাজসংস্কারক হরিচাঁদ ঠাকুর।
লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সেক্ষেত্রে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে। কিন্তু শরিকদের সহায়তায় তৈরি হচ্ছে এনডিএ সরকার। এখন আর এটা বিজেপি বা মোদী সরকার বলা যাবে না। সারা দেশেই ফল খারাপ হয়েছে বিজেপির। কিন্তু এই আবহে আজ, রবিবার সন্ধ্যায় শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর বাংলা থেকে বিরাট আশা বিজেপি করলেও ১২টি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। তবে যেহেতু মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর দ্বিতীয়বার বনগাঁ আসনটি ধরে রাখলেন তাঁকে মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। শান্তনু আগেও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
আগে শান্তনু ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। এবার হলেন পূর্ণমন্ত্রী। শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে আজ আসেন দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি আসার একটু পরেই শান্তনু ঠাকুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। তাছাড়া শান্তনু ঠাকুর কোন মন্ত্রী হন সেটাও দেখার বিষয়। এবার হুগলি, কোচবিহার, বর্ধমান–দুর্গাপুর, বাঁকুড়া বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে বনগাঁ বুক পেতে আগলে রাখেন শান্তনু ঠাকুর। তারই পুরষ্কার বাবদ আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন শান্তনু ঠাকুর। এমনকী সিএএ’র বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। তারপর নিজের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন শান্তনু।
আশা বিজেপি করলেও ১২টি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। তবে যেহেতু মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর দ্বিতীয়বার বনগাঁ আসনটি ধরে রাখলেন তাঁকে মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। শান্তনু আগেও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
Be the first to comment