অমৃতা ঘোষ :- অঝোরে বৃষ্টি গত ৪ দিন ধরে। ভাসিয়ে দিচ্ছে পুরো দক্ষিণবঙ্গ উত্তরবঙ্গ গোটা রাজ্য। জেলায় জেলায় জলমগ্ন অচলাবস্থা, রাস্তা ঘাট জলে ডুবে। বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। জলে ভেসে শুক্রবার রাতে আসানসোলের কল্যাণপুরে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।
এদিকে গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী, কংসাবতী-সহ জেলায় জেলায় একাধিক নদীর জলস্তর বেড়ে কার্যত ফুঁসতে শুরু করেছে। যার জেরে দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, নদিয়া, হুগলি এবং বর্ধমানের একাধিক এলাকা ইতিমধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার রাত থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডিভিসি ও মাইথন থেকে সম্প্রতি ৬ হাজার কিউসেক করে জল ছাড়া হয়েছিল। শুক্রবার থেকে সেই জলই ছাড়ার কাজ শুরু করেছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার কথা জানা গেছে।
সূত্রের খবর, আসানসোলের কল্যাণপুরে গাড়ুই সেতু জলমগ্ন ছিল। শুক্রবার রাতে চারচাকা নিয়ে ওই সেতু পারাপার করতে গিয়ে গাড়ি সমেত ভেসে যান চঞ্চল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। এদিন সকালে নদীর অদূরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। এদিকে ঝুমি নদীর জল বেড়ে গিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শুধু তাই নয় , এদিকে মেট্রো সিটি কলকাতার অবস্থাও সংকট জনক, চারিদিকে অতি বৃষ্টির জেরে জল জমে ভরাডুবি কলকাতা।
ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমি অক্ষরেখার প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতা-সহ দুই বঙ্গে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। শনিবার সকালেও কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার জেরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা জলমগ্ন এখন।
উল্টোডাঙা, সল্টলেক, বাগুইআটি, পাতিপুকুর-সহ কলকাতার একাধিক জায়গায় রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। কোথাও কোথাও জল এক হাঁটু সমানও।
জলমগ্ন এয়ারপোর্ট ও নিউটাউনের বিভিন্ন এলাকাও। বৃষ্টি না থামলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে পাম্পের সাহায্যে ইতিমধ্যে সল্টলেক-সহ কয়েকটি এলাকায় জল নামানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত কলকাতায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে উল্টোডাঙা এলাকায় ৪২ মিলিমিটার। একইভাবে চিংড়িঘাটায় ৩৯ মিলিমিটার, মানিকতলায় ৩৩ মিলিমিটার, দত্তবাগানে ৩২ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়া এলাকায় ২৪ মিলিমিটার, তপসিয়ায় ৩৫ মিলিমিটার, বালিগঞ্জে ২৩ মিলিমিটার, যোধপুর পার্কে ২২ মিলিমিটার, কালীঘাটে ১৫ মিলিমিটার।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকায় নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
Be the first to comment