‘আগুন জ্বলবে বাংলায়….’ নারদ কাণ্ডে ফিরহাদ হাকিমের গ্রেফতারের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। কেন মুকুল ও শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হল না? প্রশ্ন তৃণমূল কর্মীদের। এই কাণ্ডে সোমবারই ফিরহাদের সঙ্গেই প্রথমে সিবিআই দফতরে তুলে নিয়ে যাওয়া ও পরে গ্রেফতার করা হয় মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে উত্তাল শহর কলকাতা।
সোমবার সকালে নাটকীয়ভাবে বিনা নোটিসে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের একটি দল। অপর দল পৌঁছয় মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। নাটকীয়ভাবে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিকল্পনা মাফিক এদিন সকালে ফিরহাদ হাকিমের বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ফিরহাদের সঙ্গে কথা বার্তা বলেন গোয়েন্দারা। তারপরই তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেরনোর সময়ে ফিরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই জানায়, নারদকাণ্ডে চার্জশিট চূড়ান্ত করার আগেই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। উল্লেখ্য, আজই চার্জশিট পেশ করতে চলেছে সিবিআই, আর তার আগেই রীতিমতো নাটকীয়ভাবে এই গ্রেফতারি।
তবে ফিরহাদের বাড়ির সামনে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন, ঠিক তখনই ‘ববিদা’র গ্রেফতারির খবর চেতলায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূল কর্মী সমর্থক, অনুগামীরা তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে যান। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও লকডাউন মানছেন না তাঁরা। বিক্ষোভ চলবে।
বিক্ষোভরত এক কর্মীই প্রশ্ন তোলেন, “শুভেন্দু, মুকুলকে কেন গ্রেফতার করা হল না? যদি ওঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে গোটা বাংলায় আগুন জ্বলবে।” তৃণমূলের তরফেও প্রশ্ন তোলা হয় একই। কারণ যে কারণ দেখিয়ে তৃণমূলের তিন বিধায়ক ও প্রাক্তন বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হল, সেই কারণে তো অভিযুক্ত মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীও। কারণ তাঁদেরকে দেখা গিয়েছিল সেই ফুটেজে।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে, দল বদলেই কি মিলল ছাড়? এ বিষয়ে অবশ্য আগেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব খাঁড়া করেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা সৌগত রায় বলেন, “মোদী-অমিত শাহর নির্দেশে এসব হচ্ছে। আদালতে মোকাবিলা হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক কাজ। নির্বাচনে হেরে যাওয়াতেই এমনটা করল ওরা। সিবিআই একটা খাঁচাবন্দি তোতা।” অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। এই গ্রেফতারি অসাংবিধানিক।”
Be the first to comment