রোজদিন ডেস্ক :- লা-নিনা কী ?? লা-নিনা হল মধ্য ও পূর্ব নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরে শীতল সমুদ্রের তাপমাত্রার দ্বারা চিহ্নিত একটি চক্রাকার ঘটনা। ভারতে মৌসুমী বায়ুর ওপরে লা-নিনার প্রভাব আগেও পড়েছে।
জুলাইয়ের শেষ ও অগাস্টের শুরুতে দেশের বিভিন্ন অংশে অতিভারী বৃষ্টির প্রভাবে ভূমিধস দেখা গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। নিখোঁজ অনেকে। সেই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দফতর ভবিষ্যদ্বাণী করেছে বর্ষার শেষের দিকে অর্থাৎ অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে লা-নিনার সম্ভাব্য প্রভাবে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হতে পারে।
যদিও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি মৌসুমী বায়ু সক্রিয়তায় একটু বিরতি আসতে পারে। খরিফ শস্য ও ফসলের বৃদ্ধির জন্য এই দুই মাসের বৃষ্টি যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেপ্টেম্বরে যে বৃদ্ধি হবে, তা হবে লা-নিনার প্রভাবে, স্বাভাবিকের তুলনায় সেই বেশি বৃষ্টির জেরে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস, শহুরে এলাকায় বন্যা এবং নিম্ন এলাকাগুলি প্লাবিত হতে পারে।
এত কিছুর পরেও দেশের কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাতে ঘাটতি থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। প্রসঙ্গত জুলাই মাসে দেশের আটটি রাজ্যে স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টিপাত হয়েছিল। যেমন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলেও, দক্ষিণবঙ্গে তা ছিল স্বাভাবিকের থেকে কম।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, বর্ষার দ্বিতীয়ার্ধে উত্তর-পূর্ব ভার ও সংলগ্ন এলাকা, লাদাখ, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের অনেক অংশ ছাড়া বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি। তবে মধ্য ভারত ও দক্ষিণ ভারতের কিছু বিচ্ছিন্ন অংশে স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস সারা দেশে বৃষ্টিপাত দীর্ঘ সময়ের গড় ১০৬ শতাংশ হবে, যা ৪২২.৮ মিমি। আগামী দুই মাসে পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে গড় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
জুনে বর্ষার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের থেকে ১১ শতাংশ কম হওয়ার পরেও ভূগর্ভস্থ জল ও সেচের কারণে দেশের বিভিন্ন অংশে কৃষিকাজ স্বাভাবিক ভাবেই চলছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি রিপোর্টে। পরেই বৃষ্টিপাতের বন্টন ছিল অসম। জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত নয় শতাংশ বৃষ্টি বেশি হয়েছিল।
গত শুক্রবার পর্যন্ত চাষের জমির মোট পরিমাণ ৮১২ লক্ষ হেক্টরে পৌঁছেছে। যা গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় ১৮ লক্ষ হেক্টর বেশি। ভারতের কৃষিক্ষেচ্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বর্ষা। দেশের কৃষিজমির ৫২ শতাংশ বর্ষার বৃষ্টির ওপরে নির্ভর করে।
Be the first to comment