উন্নয়নের যজ্ঞে বাংলাদেশ ভারতের সহযাত্রী ৷ বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থানে গিয়ে শনিবার এমনই দাবি করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ একই সঙ্গে ওড়াকান্দির উন্নয়নে একগুচ্ছ ঘোষণা করেছেন নরেন্দ্র মোদী ৷
ঘটনাচক্রে এ দিনই পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হল ৷ ফলে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা এবং ওড়াকান্দির ঠাকুবাড়ি সফর আসলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়াদের মন জয়ের চেষ্টা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ ওড়াকান্দিতে বক্তব্য রাখার শুরুতেই এ দিন প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ভারতে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ওড়াকান্দিতে এসে যে আবেগ অনুভব করেন, সেই অনুভূতি তাঁরও হচ্ছে ৷ নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেও ওড়াকান্দি আসার ইচ্ছে ছিল তাঁর কিন্তু সেবার আসা না হলেও এ দিন সেই দীর্ঘদিনের বাসনা পূর্ণ হল৷ পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়ির কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ৷
তাঁর কথায়, ঠাকুরনগরে যখন এসেছিলেন, সেই সময় বড়মা বীণাপানি দেবী তাঁকে মায়ের মতো আশীর্বাদ করে আপন করে নিয়েছিলেন ৷ যে ঘটনা তাঁর জীবনের অন্যতম মূল্যবান মুহূর্ত বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী ৷
এদিন ওড়াকান্দিতে যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী ৷ যশোরেশ্বরী কালীবাড়িতে গিয়েও পুজো দেন তিনি ৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত- বাংলাদেশের সরকার দুই দেশের সম্পর্ককে ন ভারত এবং বাংলাদেশ নিজেদের অগ্রগতির মধ্যে দিয়ে বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায় ৷ দুই দেশই গোটা বিশ্বে হিংসা, অস্থিরতা, সন্ত্রাসের বদলে স্থিতিশীলতা, প্রেম এবং শান্তি চায় ৷ এই শিক্ষাই হরিচাঁদ ঠাকুর আমাদের দিয়েছিলেন৷ আজ বিশ্ব যে মানবতা, মূল্যবোধের কথা বলে, সেই মূল্যবোধের জন্য হরিচাঁদ ঠাকুর নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন ৷
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে শিক্ষা বিস্তারের অভিযানে ভারতের জনগণও যুক্ত হবে ৷ এখানে মেয়েদের জন্য যে মিডল স্কুল রয়েছে, ভারত সরকার সেটিকে উন্নত করবে ৷ নতুন নতুন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে ৷ পাশাপাশি ভারত সরকার ওড়াকান্দিতে একটি প্রাথমিক স্কুলও প্রতিষ্ঠা করবে ৷ এটা ভারতের কোটি কোটি মানুষের পক্ষ থেকে হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য ৷ বাংলাদেশ সরকার আমাদের এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ ৷ হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে বারুণী স্নান উৎসবে যোগ দিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রচুর মানুষ আসেন ৷ এই তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থেও ভারত সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্প্রদায়ের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরতেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা তিনি ৷
সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সবার উন্নয়নে বিশ্বাসী ৷ বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যে আমাদের সহযাত্রী৷ বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে বিকাশ আর পরিবর্তনের শক্তিশালী উদাহরণ তুলে ধরছে ৷ এই প্রচেষ্টাতেও ভারত আপনাদের সহযাত্রী ৷
Be the first to comment