“কেন্দ্রীয় সরকার শুধু আইন দেখাচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই করছে না।” বিস্ফোরক মন্তব্য বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। বিজেপি সাংসদের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারি নীতির এ হেন সমালোচনায় স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। সিআইএসএফের প্রহরা থাকার সত্ত্বেও কীভাবে সাংসদের বাড়ির সামনে বোমাবাজি হল, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
বুধবার রাতেও জগদ্দলে অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। রাত ২ টোর সময়ে আচমকাই দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়ির সামনে পরপর বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়ে। গোটা পাড়া আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ঘটনায় তৃণমূলেরই হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে জগদ্দল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অর্জুন সিং। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সকালে তদন্তকারীরা এলাকা পরিদর্শন করে যান। সে সময় পুলিশের সামনেই অর্জুন সিং অভিযোগ করেন, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে। এরপরই ক্ষুব্ধ অর্জুনের মুখে বিস্ফোরক কথা। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার শুধু আইন দেখিয়ে যাচ্ছে। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না! এদিকে দলীয় কর্মীরা ঘর ছাড়া হচ্ছে ,তাদের বাড়ি লুঠপাট হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে মারধর করা হচ্ছে। বাংলার অবস্থা আবার ১৯৪৭ হতে চলেছে।”
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন অর্জুন সিং। বাড়ির সামনে সিআইএসএফের প্রহরা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে বোমাবাজি হল, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া নিরাপত্তার ভূমিকা কী তাহলে? প্রশ্ন তুলেছেন খোদ সাংসদই। এর আগে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন অর্জুন সিং। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর জগদ্দল, ভাটপাড়া এলাকায় যেভাবে দলীয় কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা ঘরছাড়া. তারই প্রতিবাদে এই কথা বলেছিলেন সাংসদ। তাঁর বক্তব্য ছিল, “গণতন্ত্র রক্ষার জন্য জনগণের ভোটে জয়ী হয়েছি। আর জনগণকে রক্ষা করতে পারছি না। তাহলে সেই জনপ্রতিনিধি থেকে লাভ কী? এর থেকে ইস্তফা দিয়ে দেওয়া আমাদের উচিত।”
নিজের লোকসভা এলাকায় সাতটি বিধানসভাতেই জয়ের টার্গেট করেছিলেন অর্জুন। আত্মবিশ্বাসের সুর লক্ষ্য করা গিয়েছে গণনার আগের দিন পর্যন্তও। কিন্তু দিনের শেষে হাতে ছিল শুধু ভাটপাড়া আর জগদ্দল। বাকি ৫টি বিধানসভাই তাঁর হাতছাড়া হয়েছে। সবুজ আবিরে কার্যত ধূলিসাৎ বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গড়।
বীজপুরেও হেরে গিয়েছেন মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়। বারাকপুর, আমডাঙা, নৈহাটি, বীজপুরে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এমনকি নোয়াপাড়াও হাতছাড়া অর্জুনের। এদিকে, অর্জুন গড়ে কান পাতলে শোনা গিয়েছে, দাপুটের নেতার সাংগঠনিক ক্ষমতাই এখন প্রশ্নের মুখে। সব মিলিয়ে বিজেপি অন্দরে এখন জোর জল্পনা।
Be the first to comment