মানুষের ঘায়ে মলম লাগাতেই এই সফর, কোচবিহার বিমানবন্দরে নেমে বললেন রাজ্যপাল

Spread the love

শীতলকুচি যাওয়ার উদ্দেশে কোচবিহার বিমানবন্দরে নামলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । এদিন বিএসএফের হেলিকপ্টারে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কোচবিহার বিমানবন্দরে নামেন তিনি । তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ৷ বিমানবন্দরে নামার পর তিনি সোজা শীতলকুচির উদ্দেশে রওনা দেন।

বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই শীতলকুচি, সিতাই, দিনহাটা বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির ঘটনা ঘটছে। সেখানকার আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপর রাতে কোচবিহার সার্কিট হাউসে থাকবেন এবং আগামীকাল সকালে কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে অসমের উদ্দেশে রওনা দেবেন। অসমের রাঙাপানি, গোয়ালপাড়া, শ্রীরামপুরে বিভিন্ন এলাকায় বহু আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা আশ্রয় নিয়েছেন। সেই ক্যাম্পে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।

হেলিকপ্টার থেকে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন,”মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সংবিধান মেনে কাজ করা ৷ আর রাজ্যপালের দায়িত্ব হল সংবিধানকে সংরক্ষিত করা, সুরক্ষিত করা ৷ আর অনুচ্ছেদ ১৫৯ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপালের কর্তব্য মানুষের সেবা করা ৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক আদেশকে ঢাল বানিয়ে আমাকে চিঠি লিখে আমার যাওয়া নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তাতে আমি খুব অবাক হয়েছি ৷ রাজ্যপালকে হাতের মুঠোয় করা, সংবিধানকে অনাদর করা, এক প্রশাসনিক আদেশকে সংবিধানের থেকেও বেশি মনে করলে সেটা প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যায় ৷”

তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি দেখে আমাকে অনেকে প্রশ্ন করছিলেন যে আমি রাজ্যপাল হয়ে কী করছি ? আমি সরকারকেও এই বিষয়ে জানতে চাই ৷ কিন্তু কিছুই জানতে পারেনি ৷ তখনই আমি স্থির করে নিই যে, এমন পদক্ষেপ করব যাতে মানুষের ঘায়ে একটু মলম লাগে ৷ আর যখন থেকে আমি রাজ্য সফরের কথা ঘোষণা করি, তখন থেকেই পরিবর্তন এসেছে ৷ যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা ফিরে আসছেন ৷ এটা দেখে আমার ভাল লাগছে ৷ “

মূলত ভোট পরবর্তী হিংসা দেখতেই আজ কোচবিহারে সফর ধনকড়ের । এদিকে, এই সফরকে ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চলছে ৷ চিঠি পাল্টা চিঠির পালা চলছে ৷ রাজ্যপালের সফরের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া চিঠি গিয়েছিল রাজভবনে । মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে লিখেছিলেন, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে এভাবে জেলা সফরে যেতে পারেন না রাজ্যপাল । এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে সরকারি বিধি স্মরণ করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার সঙ্গে পরামর্শ না করে জেলা সফর করতে পারেন না রাজ্যপাল । এর উত্তরে গতকাল মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা কড়া চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ চিঠিতে রাজ্যপাল লেখেন, সংবিধান মেনে যা যা করার সব করব ৷ রাজ্যপালের কথায়, “ভোট পরবর্তী হিংসায় বহু মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছেন ৷ যা অস্বীকার করা যায় না ৷ আমি সংবিধান মেনেই যা করার করছি ৷ আশা করি আপনিও সংবিধান মান্যতা দেন ৷ সেক্ষেত্রে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত ৷” রাজ্যপাল উল্লেখ করেন, “সংবিধানের আওতায় থেকেই আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য যা করার করব ৷”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*