রাজ্য বনাম কেন্দ্রের দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপড়েনের পর অবশেষে আগামিকাল পিএম কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের টানা পেতে চলেছেন বাংলার চাষিরা। শুক্রবার সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই টাকা সোজাসুজি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করবেন। প্রতি কিস্তিতে দু’হাজার টাকা করে বছরে ৬ হাজার দেওয়া হবে। নমো সেই টাকা পাঠানোর আগের দিন রাতেই রাজ্যের কৃষকদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট প্রচারে এসে বিজেপি নেতারা ১৮ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সেটা যে পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়ে নিজের চিঠিতে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে মমতা অভিযোগ করেছেন, টালবাহানা ও অজুহাত দেখিয়ে দিল্লির সরকার কিসান নিধির টাকা দিচ্ছিল না। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করার পরই যে মোদী সরকার ২০১৯ সালে এই প্রকল্প নিয়ে আসে, সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। মমতার দাবি, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও রাজ্যের তরফে যে সমস্ত কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কথা জানানো হয়েছিল যারা কিসান নিধি প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। একই সঙ্গে টাকা যাতে আসে তার জন্য যা যা পদক্ষেপ করার রাজ্য সরকার তা যথা সময়েই করেছে বলে দাবি করেন মমতা।
যদিও এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের পালটা দাবি, টাকা পাঠানোর জন্য রাজ্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নথিভুক্ত কৃষকদের তথ্য যাচাই করে পাঠানোর জন্য। কিন্তু রাজ্য সরকার তা সঠিক সময়ে না দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কৃষকেরা। মমতা তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পরও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর তাঁকে চিঠি লিখে আবেদন করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেন দ্রুত চাষিদের তথ্য যাচাই করে কেন্দ্রকে দেয়।
যদিও এই চিঠি নবান্নে এসে পৌঁছনর আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ২১.৭৯ লক্ষ চাষি নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪.৯১ লক্ষ্য কৃষকের তথ্য যাচাই রাজ্য সরকার করে দিয়েছে। এবং সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা পাঠাতে পারবে।
দীর্ঘ টালাবাহানার পর অবশেষে আজ, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার জানা যায় যে আগামিকাল প্রথমবারের জন্য এ রাজ্যের কৃষকেরাও প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। যদিও এর আগেকার কিস্তিগুলি না আসায় মোট এ রাজ্যের কৃষকদের বকেয়ার পরিমাণ যে বর্তমানে ১৮ হাজার টাকা, তা চিঠির শেষে মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। ভোটের আগে বিজেপি নেতারা পুরো টাকাটাই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা চাষিরা এখনই পাচ্ছেন না। রাজ্য চাষিদের সেই বকেয়া আদায়ের জন্যও লড়ে যাবেন বলে এ দিন চিঠির শেষে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা।
Be the first to comment